কোটা আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখির কারণে এখন কারাগারে আছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। ২৪ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২৪ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ আইসিটি আইনে হাটহাজারি থানায় মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মাইদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ৫৭ ধারায় মামলা করেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে। এর আগে লেখালেখির কারণে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল ক্যাম্পাসে। অতঃপর মামলা, অন্তর্বর্তীকালীন জামিন এবং জামিন শেষে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাবাস।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম সম্পর্কে নীরব ভূমিকা পালন করলেও দেশের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষক এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। কোটা সংস্কারের সমর্থনে ফেসবুকে নিজের মত তুলে ধরায় একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা এবং সেই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
এর পরে দেশে-বিদেশে অনেক নিন্দা ও প্রতিবাদ হয়েছে কিন্তু হেয়াই হয়নি কারাবাস থেকে। মাইদুল ইসলামের কারবাসে দেশের আইন ও আদালতের উপর জারি থাকা অনাস্থাই যেন আবারও সত্য প্রমাণিত হল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারান্তরীণ মাইদুল ইসলামের স্ত্রী এক পোষ্টে তার স্বামীকে নিয়ে গর্ব বোধ করে যে লেখাটি লিখেছেন তা তুলে ধরা হল:
“ওকে নিয়ে ভীষণ গর্ব হয়, এটুকুর জন্যও গর্ব হয় যে এই মানুষটিকে এত কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, জীবনটাকে মাইদুলের মত এমন সজ্জনের জন্য ভাগাভাগি করার সৌভাগ্য হয়েছে। তাই তো মহাবিশ্বের সমস্ত ভালোবাসা তোমার জন্য নিবেদন করতে ইচ্ছে করে, মাইদুল ইসলাম।
শুধু মাঝে মাঝে মনে হয় যারা কোন অপরাধ ছাড়াই ওকে এতটা ভোগাল তারা কি নিজেদের কখনো ক্ষমা করতে পারবে? যে ছাত্রলীগ কর্মী বিনা অপরাধে মামলা করে তাকে জেলে পাঠাল সেও কি কোনদিন বাড়ি ছেড়ে, পরিবার ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সময় মায়ের আঁচলে চোখ মুছেছিল? আমি ভীষণ স্বস্তি পাই যে আজ মাইদুলের মা, আমার শাশুড়ি মা বেঁচে নেই।”