মন্ত্রিসভায় কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন, সংস্কারের বদলে বাতিলের দায় কার?

মন্ত্রিসভায় কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন, সংস্কারের বদলে বাতিলের দায় কার?

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলে সচিব কমিটির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। সেই সাথে দাবি বুঝতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকার তার এই পর্যায়ের ক্ষমতা শেষ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তবে বহাল থাকছে নিচের দিকের পদের কোটা পদ্ধতি।

তিনি আরও বলেন, “আমরা আজ কালের মধ্যেই মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিবো। তারপরেই জনপ্রশাসন প্রজ্ঞাপন জারি করবে। ওই দিন থেকেই এটি কার্যকর হবে”

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক হাসান আল মামুন জানিয়েছেন, সচিব কমিটির সুপারিশগুলো বিস্তারিত দেখে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘কোটা সংস্কার’র দাবি তোলে দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতির সংস্কারই ছিল তাদের দাবি। এই দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের সহ্য করতে হয়েছে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সশস্ত্র হামলা। আর আইনের ফাঁক-ফোকরে গ্রেফতারতো রয়েছেই।

আর পরিস্থিতি সামলানোর চিরচারিত রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাতিল করার ঘোষণা দেন জাতীয় সংসদে। সেদিন ‘দাবি না বোঝা’র শুরু অথবা ‘বুঝতে না পারার ব্যর্থতার শুরু। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, কোটা সংস্কার আর প্রধানমন্ত্রী ভাবলেন, দাবিটা বাতিলের। তারপরও ১১ এপ্রিলের প্রতিশ্রুতি ১২ জুলাই আবার পাল্টে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। হারালেন বিশ্বাস। ব্যবহার করলেন ছাত্রলীগ। ব্যাপক হামলার মুখে আবারও বাতিলের সিদ্ধান্ত। তবে এবার দাবিটা ‘প্রজ্ঞাপন’র। তারই ধারাবাহিকতায় এবার মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন পেল ‘কোটা বাতিল’।

কিন্তু ছাত্র-সংগ্রামের এই সাফল্যের মধ্যেও রয়ে গেল, ব্যর্থতা। কোটার সাথে কোনদিনই শত্রুতা ছিল না শিক্ষার্থীদের। তাদের দাবিতে যৌক্তিক ১০ শতাংশ কোটার কথা শুরুতেই উল্লেখ ছিল। কিন্তু সে দিকে খেয়াল না করে, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারদলীয় রাজনীতিবিদরা বারবার শিক্ষার্থীদের উপর চাপাচ্ছেন কোটা বাতিলের দায়। বলছেন, কোটা বাতিল চেয়েছে, বাতিল করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আদৌ কি শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিল চেয়েছিল? হয় সরকার দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখেননি, না হয় অন্য কোন উদ্দেশ্যে দেখতে চাননি!