আমেরিকার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে করা আপিলে জয়ী হলো ইরান। অনেকদিন থেকেই ইরানের উপর আমেরিকার অবরোধ চলে আসছে। তবে এই অবরোধ যেন মানবিক সহায়তায় প্রভাব না ফেলে তার জন্য আমেরিকার একতরফা নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের আবেদন করে ইরান। যার প্রেক্ষিতে মানবিক পণ্য সরাবরাহ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ট্রাম্প প্রশাসনের করা এই অবরোধ ১৯৫৫ সালে করা ইরান ও আমেরিকার শান্তিচুক্তি পরিপন্থী বলেও আখ্যা দেন আন্তর্জাতিক আদালত। ইরানের করা বিশ্বনেত্রীবৃন্দের সাথে পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়েই অবরোধ ডাকে আমেরিকা। এই রায়ের পর ইরানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানায় “এই রায় প্রমাণ করে দিলো যে ইরানের বিরূদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা ছিলো ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে কতটা নিষ্টুর এবং আইন পরিপন্থী”। এদিকে রায়ে আর ঘোষণা করা হয় আমেরিকা যেনো মানবিক দিকটা চিন্তা করে। বিভিন্ন ঔষধ, খাবার সামগ্রী, কৃষি সামগ্রী ও বেসরকারি বিমান চলাচল সেবা নির্বিঘ্নে পরিচালনার ও আদেশ দেয়া হয়। ঔষধের কাঁচামাল এবং আরো কিছু সামগ্রী নিয়ে আদালতে নিজেদের সাফাই বক্তব্য পেশ করে আমেরিকা। সেখানে তারা এসকল পণ্যের উপর আমেরিকার হস্তক্ষেপ অস্বীকার করেন। তবে আদালত তা গ্রহণ করেনি।
এদিকে আমেরিকার আইন উপদেষ্টা জেনিফার নিউস্টেড বলেছেন আমেরিকার বিরুদ্ধে এই মামলা ইরানের ‘ঝগড়াটে’ আচরণ মাত্র এবং তারা মামলা করেছে শুধু আমেরিকার প্রতি তাদের ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে। এদিকে আমেরিকা তাদের অবরোধ আরো কড়াকড়ি করবে বলে জানা গিয়েছে। এতে ইরানের খনিজ তেল রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য গত মাসে নিউইয়র্কের জাতিসংঘের সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকাকালীন ইউরোপীয় ইউনিয়নের এবং চীন-রাশিয়ার সাথে বিশেষ বৈঠক হয় ইরানের। এই বৈঠকের পর তারা রাজি হন ইরানের সাথে সকল রকম বাণিজ্য করার। এই সকল বাণিজ্য কর্ম সম্পন্ন হবে আমেরিকার কোন হস্তক্ষেপ ছাড়াই। এরকম একটি সিদ্ধান্ত আমেরিকার জন্যে তিরস্কারসূচক ছিলো বলেই মনে করছেন আমেরিকার কর্তাগণ। এরকম একটি চুক্তির পরেই আমেরিকার বিরুদ্ধে এমন একটি রায় দিল আন্তর্জাতিক আদালত।