ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে ‘শিবির’ বলে মারধর করল ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে ‘শিবির’ বলে মারধর করল ছাত্রলীগ

কথা-কাটাকাটির জের ধরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে৷

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রুহুল আমিনের বড়ভাই ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি মারা গেলে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মরদেহ নিতে রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা ও রুহুল আমিনের ভাবী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে লিফটে উঠার সময় কথাকাটি হওয়ার পর রুহুল আমিনকে সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং তার অনুসারীরা মারধর করেন বলে জানান তারা।

হামলার শিকার রুহুল আমিন বলেন, “সঞ্জিত আমাকে মারতে মারতে আট তলা থেকে নিচে নিয়ে আসে। সে আমাকে শিবির বলে গালাগালও করেছে।” সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, “আমি আমার পরিচয় দিয়েছি। বলেছি লাশ নিতে এসেছি। তবুও ওরা আমাকে যেভাবে শিবির বলে মারধর করেছে… এতবছর ছাত্রলীগ করে যদি এই লজ্জা পেতে হয় তাহলে কার জন্য ছাত্রলীগ করলাম, কীসের জন্য ছাত্রলীগ করলাম!”

তবে রুহুল আমিনকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, কে বা কারা তাকে মারধর করেছে তা তিনি জানেন না।

তিনি আরও বলেন, “আমার অন্তঃসত্ত্বা ভাবীকেসহ আমার ভাই মেডিকেলে গিয়েছিল। সেখানে লিফটে ওঠার সময় রুহুল ভাই আমার ভাইয়ের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে৷ সে আমার ভাইকে বলেছে, আমি যদি তোর হাত পা ভাইঙ্গা ফেলাই তাইলে কি করবি? তখন আমার ভাই বলেছে, আমি সঞ্জিতের বড় ভাই। তখন রুহুল আমি অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেছে, “তারে আসতে ক” পরে পোলাপানের সাথে নাকি ঝামেলা হয়েছে।”

মারধর নয়; বরং ঝামেলা সমাধান করে এসেছে জানিয়ে সঞ্জিত বলেন, তিনি রুহুল আমিনকে মারেননি। তবে ‘পোলাপানের সাথে’ তার সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছেন। তখন তিনি গিয়ে ঝামেলা ‘মিটিয়ে দিয়ে’ এসেছেন।

ঘটনার ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, “একজন সিনিয়র নেতা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, একটা হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার ওপর এরকম হামলা অবশ্যই নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক। আমরা উনাকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। আমরা তদন্ত করে এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

ছাত্রলীগ তাদের ব্যক্তিগত শত্রুদের শিবির বলে মারধরের যে বিপজ্জনক সংস্কৃতি চালু করেছে। তারেই ফলাফল স্বরূপ, এখন নিজেরাই নিজেদের ‘শিবির’ সম্বোধন করে ব্যক্তিগত শত্রুতার প্রতিশোধ নিচ্ছে। এটি ছাত্ররাজনীতির জন্য ভয়াবহ একটি হুমকি।