সরকার বললেই কেউ দুর্নীতিবাজ হয়ে গেলে কোর্ট কাচারি উঠে যাক : এসকে সিনহা

সরকার বললেই কেউ দুর্নীতিবাজ হয়ে গেলে কোর্ট কাচারি উঠে যাক : এসকে সিনহা

সুরিন্দর কুমার সিনহার ‘এ ব্রোকেন ড্রিম : রুল অব ল’, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’র পাতায় পাতায় ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে বর্তমান সরকারে আধিপত্য এবং বিচার ব্যাবস্থায় হস্তক্ষেপের নগ্ন চিত্র। এবার দেশের সাবেক এই প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে উঠে আসলো আরও নিষ্ঠুর কিছু সত্য। বাংলা ইনফো টিউব’এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দেশের এই ভয়ানক পরিস্থিতির কথা প্রকাশ করেন।

এসকে সিনহা বলেন, সরকার বলেছে একজন দুর্নীতি করেছে আর সে দুর্নীতিবাজ হয়ে গেলো, তাহলে কোর্ট-কাচারি উঠে যাক। সাবেক বিচারপতি তাকে দুর্নীতিবাজ বলা প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন। তিনি জানান, প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর থেকেই তিনি কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ পাচ্ছিলেন না। তখনই তিনি পদত্যাগের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছিলেন আর চারজন বিচারপতি তাকে দুর্নীতিবাজ বললেন এবং তার সাথে বসতে অস্বীকৃতি জানালেন আর তিনি দুর্নীতিবাজ হয়ে গেলেন। তারা কি তার বিচার করে ফেললেন। তিনি আরও বলেন, এই চারজন বিচারপতিই কয়েকদিন আগে তাকে বলেছিলেন যে রায়ের জন্য সরকারের অপেক্ষা করবেন না। সরকারের মুখাপেক্ষী হবেন না। কিন্তু আমি যখনই বিদেশ চলে আসলাম। তারা সে অস্থান থেকে সরে গেল এবং বলল- রাষ্ট্রপতি বলেছে। তাহলে কোর্ট-কাচারির কি দরকার।

এসকে সিনহা জানান, তিনি সবসময়ই সরকারি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি তার বিচারপতিদের সে বিষয়েও পরামর্শও দিয়েছেন। যেমন, একে জামিন দাও, ওকে রিমান্ড দাও। এরকম বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়ে আসছেন তার দায়িত্ব পালনকালে।

এসকে সিনহা এক প্রশ্নে জবাবে বলেন, “বিচার বিভাগের প্রতি প্রশাসনের এক ধরণের দমনমূলক ভাব। যার কারণে বিচার বিভাগের কোন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আসেন না। বার্ষিক জুডিশিয়ালি কনফারেন্সের আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করার পরও তিনি আসেননি। জানা গেল- যদি আমরা কোন দাবি আদায় করে ফেলি, কোন প্রশ্ন করি তাহলে”। এসকে সিনহা আরও বলেন, তিনি পুলিশ, আর্মির সবধরণের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, শুধু বিচার বিভাগের হলে না কেন?

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি সরকার কিংবা ব্যাক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর বিরোধের ব্যাপারটিও প্রকাশ্যে আনেন। তিনি বলেন, সরকারের কাছে বিচারপতিদের জন্য কম্পিউটার চাওয়ার পরেও কোন কম্পিউটার পাননি। প্রধানমন্ত্রী যখন বিচার বিভাগের ভবন উদ্বোধন করতে আসেন পূর্ত মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে তখন তিনি বিচারপতিদের সাথে সৌজন্যতা প্রকাশ না করেই চলে যান। যার ফলে বিচার বিভাগের সাথে সরকারের বিস্তর দূরত্ব তৈরি