বেকার তরুণেরা এখন সরকারের আয়ের উৎস!

বেকার তরুণেরা এখন সরকারের আয়ের উৎস!

বাংলাদেশে বেকারদের হাহাকার নতুন কিছু নয়। সরকারি পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশে বেকার সংখ্যা বলা হচ্ছে ২৬ লক্ষ ৮০ হাজার। কিন্তু প্রকৃত তথ্য যাচাই করলে বেকারের সংখ্যা কল্পনাতীত! এই সংখ্যা ৪ কোটি ৮০ লক্ষ ছাড়িয়েছে! আবার কর্মক্ষম কিন্তু কোনরকম শ্রমশক্তিতে যুক্ত হয়নি এমন লোকের সংখ্যা সাড়ে চার কোটিরও উর্ধ্বে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও)এর সংজ্ঞা অনুযায়ী এত মানুষ বেকার হওয়ার পরেও সরকারের তালিকায় আসছেনা এদের কারো নাম।

বাংলাদেশে বেকার তরুনরা হতাশ হচ্ছে প্রতিদিন। এত বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অর্থনিতিবীদেরা দুষছেন বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম হওয়াকে। তবে অনেক বিনিয়োগকারী মনে করেন বাংলাদেশে বর্তমানে উন্নয়নের অগ্রগতি হলেও এখনো পূর্ণ বিনিয়োগ সহায়ক নয় তাই আসছেনা কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ। তবে এই মাত্রাতিরিক্ত বেকার সংখ্যায় আয়ের হাতিয়ারে পরিনত হয়েছে সরকারের জন্য! এমনটায় মনে করছেন অনেক শিক্ষিত কিন্তু বেকার তরুনই। আর পরিসংখ্যানও তেমনটাই বলছে। গত ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করে মোট ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার। এই পরীক্ষার ফর্ম প্রতি মূল্য ধরা হয় ৭০০ টাকা, প্রতিবন্ধী ছাত্রদের জন্য ১০০ টাকা। এই ৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষাতেই পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)এর ফর্ম-আয় ছিলো প্রায় ২৫ কোটি টাকা! অনেক তরুণ বেকারের মতে এত টাকা ফর্মের মূল্য নির্ধারণ করা অনর্থক। তারা মনে করেন সরকারি চাকরিতে আবেদন করার জন্য নূন্যতম অংকের টাকা নেয়াটাই নৈতিক। কিন্তু এত মূল্যে দিয়ে আবেদন করতে হলে অনেকের উপর চাপ হয়ে যাচ্ছে, বলছেন অধিকাংশ চাকরি প্রত্যাশী তরুণ। এমনিতেই বাংলাদেশে অধিকাংশ শিক্ষিত ও উচ্চ শিক্ষিত তরুণ তরুণীদের প্রথম চাওয়াই সরকারি চাকরি আর এই জন্য দিনে দিনে সরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তারপরেও ফর্মের দাম এত বেশি হওয়াটা তাই অযৌক্তিক বলেই মনে করছেন সাধারণ অভিভাবকগণ। এর মধ্যে সরকারি যুক্তি বলছে পরীক্ষার গ্রহণেই ব্যয় হচ্ছে সব অর্থ।

অন্যান্য তথ্য মতে প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি । আর এর মধ্যে ফর্মমূল্যের এই বাড়তি চাপ শুধু তরুণদের হতাশাই শুধু বাড়াবে না বরং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও একটা দুর্নাম আসবে বলেই মনে করছে সবাই। তাই অবিলম্বে এই বিষয়টি নিয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারন তরুণ সমাজ।