জাতীয় সংসদে পাশ হওয়া বিতর্কিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮’এ স্বাক্ষর না করে পুনরায় পর্যালোচনা করার জন্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে চিঠি দিয়েছে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিজম’ (সিপিজে)। এই আইনটি সরকার তার সমালোচনা বন্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে- এমন আশঙ্কায় তারা এই চিঠি প্রেরণ করেছে। যা তারা গতকাল শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।
ডিজিটাল আইন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি দাবি করছে, সংসদে পাশ হওয়া এই আইনটি যদি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা বাংলাদেশে গণমাধ্যমে স্বাধীনতার ওপর প্রভাব ফেলবে।
সিপিজের এশিয়ার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর স্টিভেন বাটলার স্বাক্ষরিত রাষ্ট্রপতিকে দেয়া ওই চিঠিতে বলা হয়, এই আইন স্বাধীন স্বাভাবিক সাংবাদিকতা পেশার জন্য হুমকি এবং তা ঝুঁকি পূর্ণও বটে। তাই তারা রাষ্ট্রপতিকে স্বাক্ষর না করে পুনরায় পর্যালোচনার জন্য সংসদে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদে পাশ হওয়া ওই আইনে যাবজ্জীবন জেল, পুলিশকে পরোয়ানা বা অনুমোদন ছাড়াই তল্লাশি, জব্দ এবং গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা, আইনে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করার ফলে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করা হয়, বা প্রকাশ করে বা কাউকে করতে সহায়তা করে ওই আইন ভঙ্গ করলে এই আইনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা বা ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। যা পুরোপুরি সাংবাদিকতা পেশাকে বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও সরকার বলছে, এই আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সাইবার অপরাধ বন্ধ করা।
সিপিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই চিঠিতে বলা হয়, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যের কথা বলা হলেও আইনটি কর্তৃপক্ষের সমালোচনা কিংবা যা তাদের জন্য বিব্রতকর, তা বন্ধের সুযোগ তৈরি করবে। এবং এই আইনটি বাংলাদেশে ৫৬ বছরের প্রগতিশীল গণতন্ত্র এবং মুক্ত সাংবাদিকতার ঐতিহ্যকে ভয়াবহ হুমকির মধ্যে ফেলবে।