কাশ্মিরের একটি পরিণতি যে ইমরান খানের আমলে আসবে তা সবাই এক রকম ধরে নিয়েছিল। কিন্তু তা কত তাড়াতাড়ি আসবে বা আদৌ আসবে কিনা? সেটাও একটা দেখার বিষয়। তবে এখন আশার আলো দেখতেই পারেন কাশ্মিরের জনগণ। শান্তি আলোচনার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান চিঠি পাঠিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
কিছুদিন আগে দু’দেশের মধ্যে অর্থবহ ও গঠনমূলক যোগাযোগ চেয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তারই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতায় আসার পর ইমরান খান শান্তি আলোচনার এই উদ্যোগ নিলেন। চিঠিতে, চলতি মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের যে সাধারণ সভা শুরু হবে তারই মধ্যবর্তী সময়ে দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনায় বসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের নির্বাচনে জয়ের পর এক বক্তব্যে ইমরান খান দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ভারত এক পা এগোলে, পাকিস্তান দু’পা এগোবে বলে জানিয়েছিলেন। এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদি চিঠি লিখেছিলেন। তারপরই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ভাল। সেখানে বারবার সন্ত্রাসবাদের জন্য সমালোচিত হয়েছে পাকিস্তান। তাই ভারতের সঙ্গে পরিস্থিতি উন্নতি করতেই এই চিঠি বলে মনে করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ কুরায়েশি জাতিসংঘের সাধারণ সভার বৈঠকের ফাঁকে আলোচনায় বসবেন কি না তা নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জোর জল্পনা চলছে। আগস্ট মাসে পাকিস্তানে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই অর্থে ইমরান খানের চিঠিই হল দু’দেশের মধ্যে কার্যকর যোগাযোগ শুরু করার ব্যাপারে প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব।
কূটনৈতিক সূত্রে খবর, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে যে সুসংহত দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তা পুনরায় শুরু করার জন্য ইমরান খান তার চিঠিতে আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর সেই আলোচনা প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইমরান খান তার চিঠিতে লিখেছেন, কাশ্মির এবং সন্ত্রাসবাদ সহ–দু’দেশের মধ্যে যেসব প্রধান প্রধান বকেয়া ইস্যুগুলো রয়েছে, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এই চিঠির প্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বৈঠকের ফাঁকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, আমরা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি হয়েছি। তবে বৈঠকের আলোচ্যসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। যদিও এই বৈঠক হবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং শাহ মোহাম্মদ কুরায়েশির মধ্যে।