রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আইসিসি

রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আইসিসি

মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের হত্যা, যৌন নির্যাতন এবং জোরপূর্বক বিতাড়নের অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। গতকাল মঙ্গলবার এই তদন্ত শুরু করে সংস্থাটির কর্মকর্তারা। মিয়ানমারের সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পদক্ষেপ।

বার্তা সংস্থা এএফপি আইসিসিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানের ফলে উত্তরের রাখাইন প্রদেশের প্রায় সাত লক্ষ মানুষ প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এই তদন্তের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে বিচারকরা রায় দেন যে, মিয়ানমার আইসিসির সদস্য না হলেও তদন্তকাজ পরিচালনা করতে পারবে কেননা এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশও যুক্ত। আর বাংলাদেশ আইসিসির সদস্য দেশ। সংস্থাটির আইনজীবী ফাউতো বেনসোদা  বলেছেন, বর্তমানে পুরো বিষয়টি প্রাথমিক পূর্ণ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেনে তিনি। বেনসোদা বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পরে বিষয়টি আইসিসির আনুষ্ঠানিক তদন্তে রূপ নিতে পারে। এর মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘন, খুন, যৌন সহিংসতা, গুম, ধ্বংস ও লুটপাটের মতো বিষয় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হেগভিত্তিক আদালত রোহিঙ্গাদের দুর্দদশায় নির্যাতন বা অন্য অমানবিক কাজের যোগসূত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবেন। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক তদন্ত পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক তদন্তে রূপ নিতে পারে। ২০০২ সালে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধের যে তদন্ত হয় তা পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক তদন্তে রূপ নিয়েছিল।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্তের এখতিয়ার নিয়ে রায় আসার ১১দিন আগে জাতিসংঘের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগের দায়ে মিয়ানমারের সেনা প্রধানসহ শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার। এছাড়া, ঘটনা বিচারের জন্য বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ফেলে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন এবং পুরাতন মিলিয়ে ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এখন প্রায় ১০ লাখ।