• শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ
• ওয়ান ডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছেন মুশফিক
• ১৪৪; মুশফিকের এই রান ওয়ান ডে তে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ
• দুটো আলাদা এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান হলেন মুশফিক
• ১২৪; বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার সর্বনিন্ম স্কোর
মাশরাফি অধিনায়ক হবার পর থেকে বাংলাদেশ যে ধাঁচের ক্রিকেট উপহার দিয়ে যাচ্ছে তাতে যে কোনো জয়ের আগে ঐতিহাসিক শব্দটি ব্যবহারের আগে দুবার ভাবতে হয়। মরুর বুকে যেন সুনামির আঘাত হানলো টাইগাররা। আর তাতেই বিধ্বস্ত লঙ্কান সিংহ। তাইলে বলে কি ব্যাটিং নিয়ে অস্বস্তির থেকেই যাচ্ছে।
ব্যাটিং নিয়ে ভাবতে হবে
স্কোরবোর্ডে বড় সংগ্রহ এবং দিনশেষে বিশাল জয়ের পরেও বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তির কারণ ব্যাটিং। এক মুশফিক এবং মিথুনের দুটো ইনিংস বাদ দিলে বাংলাদেশের স্কোর হতে পারত ভয়াবহ। মিথুন এবং মুশফিকের ইনিংস দুটো নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাবার যোগ্য; কিন্তু তাতে লঙ্কান ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতেরও অবদান রয়েছে। ব্যাট হাতে ব্যাটসম্যানদের রান না পাওয়ার চেয়ে যেটি বেশী চোখে লেগেছে সেটি হচ্ছে আউট হবার ধরন। বিশেষ করে মাহমুদুল্লাহ এবং সৈকতের আউট দুটি জবাবদিহীতার দাবী রাখে। হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকার পরেও ইনিংসের মাঝপথে দুইজনের শট সিলেকশনের খেসারত যে দিন শেষে দিতে হয়নি তার পিছনে অন্যতম অবদান তামিমের। এ হাতে তিনি ব্যাট নিয়ে নেমে না পরলে বাংলাদেশের যে সংগ্রহ দাড়াতো সেটি এ মাঠে চ্যালেঞ্জিং হত কি না বলা মুশকিল। পরিসংখ্যান মতে এ মাঠে রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডই বেশী। তাই জয়ের আনন্দের পাশাপাশি পরবর্তি ম্যাচে ব্যাটিংয়ে উন্নতি আবশ্যক।
০,০,১,১ -এটি হচ্ছে মূল সাত ব্যাটসম্যানের চার জনের স্কোর। ওপেনিংয়ে নেমে এবার ব্যার্থ লিটন। আর সৈকত তো ব্যার্থতার ধারাবাহিকতাই বজায় রেখে চলেছেন। এ ম্যাচে তার ব্যাটিং সমালোচনার মুখে পরতে বাধ্য। যে জায়গায় ব্যাটিং করেন তাতে অন্যান্য সময় নেমেই স্লগের তাড়া থাকলেও এ ম্যাচে সেটি ছিল না। হাতে পর্যাপ্ত ওভার থাকার পরেও থিতু হয়ে ইনিংস বড় করার কাজটি করতে সম্পুর্ন ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
আশার আলো দেখালেন মিথুন
গত কয়েকটি ম্যাচে জুনিয়রদের ক্রমাগত ব্যর্থতার মাঝে মিথুনের ইনিংসটি যেন এক ঝলক সুবাতাস। রান পেয়েছেন বলেই নয়, সময় গড়ানোর সাথে সাথে যেভাবে নিজের সহজাত খেলাটি খেলেছেন সেটি প্রসংশার দাবী রাখে।
বোলিংয়ে শুরুতেই চমক, পুরো ইনিংসে টিম অ্যাফোর্ড
ব্যাটিংটা পুরো মুশফিকময় হলেও বোলিংয়ে বাংলাদেশ কাজ করেছে একটি ইউনিট হিসাবে। উইন্ডিজ সফরে মাশরাফির সাথে নিয়মিত মিরাজকে ওপেনিংয়ে দেখা গেলেও এ ম্যাচে মিরাজের জায়গায় নতুন বল হাতে নিয়েছেন মোস্তাফিজ। নিখুঁত পরিকল্পনার সুফল এসেছে শুরুতেই। মোস্তাফিজই প্রথম আঘাত হানেন লঙ্কান ইনিংসে। এরপর মাশরাফির জোড়া আঘাতে লঙ্কান ইনিংসের কোমড়ই ভেঙ্গে যায়। তারপর যা হয়েছে তা শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টাই। মাশরাফি থেকে মোসাদ্দেক বল হাতে উইকেট পেয়েছেন প্রত্যেকেই। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সময় ম্যাচের রঙ একাধিকবার বদলালেও লঙ্কান ইনিংসের পুরোটাই ছিল বাংলাদেশের বোলারদের দাপট। এমন আটোসাটো বোলিংয়ের যে কোনো জওয়াব লঙ্কানরা দিতে পারে নি সেটি তো ম্যাচ শেষেই স্পষ্ট।
হাথুরু শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নেবার পর থেকে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে নিদাহাস ট্রফি। ২০১৬ সালের পর মুখোমুখি লড়াইয়ে এ ম্যাচের আগ পর্যন্ত সমতা ছিল দু দলের মধ্যে। একপেশে জয়ে এখন ৭-৬ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। পুরোনো দিনে লঙ্কানরা যেভাবে বাংলাদেশকে নিয়ে খেলত ঠিক উল্টো চিত্র দুবাইয়ে দেখতে পাওয়াটা যে বাংলাদেশের দর্শকদের বাড়তি আনন্দ দিয়েছে সেটি বাহুল্য।