যুক্তরাষ্ট্রে ফখরুল, নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে জাতিসংঘ

যুক্তরাষ্ট্রে ফখরুল, নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছে জাতিসংঘ

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক গেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার রাত পৌনে দুইটায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যান তিনি। মির্জা ফখরুলের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার উপদেষ্টা বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে গিয়ে বৈঠকে অংশ নেবেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠেয় বৈঠকটিতে আলোচ্য বিষয় হিসেবে থাকবে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, খালেদা জিয়ার কারা মুক্তি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র পর্যবেক্ষণ। এই বৈঠকটি মূলক জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিরোস্লাভ জেনকার সাথে হবে। এছাড়া সফরে যুক্তরাষ্ট্রের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ২৪ আগস্ট জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকা বিএনপি মহাসচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠান। এতে জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

জানা গেছে, বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মানবাধিকার পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন অধিক গুরুত্ব পাবে। বিএনপি এ বিষয়ে একটি লিখিত বক্তব্যও তৈরি করেছে। যেখানে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ৫টি সিটি নির্বাচনের উপর ভিত্তি করে- ম্যানিপুলেশন অ্যান্ড ইনটিমিডেশন, হাউজ অব কার্ডস, এই নিউ মডেল অব ম্যানিপুলেটেড ইলেকশন, টেল অব ডেসপায়ের ও দ্য পাওয়ার প্লে- শীর্ষক ৫টি পৃথক প্রতিবেদন করা হয়েছে। নির্বাচনকালীন অনিয়মের চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার বিচার প্রক্রিয়া, তার মুক্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়া এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, মামলা ও গ্রেফতার হয়রানির বিষয়গুলোও জাতিসংঘকে অবহিত করা হবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। সেই চিঠিতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে কী কী বাধা রয়েছে তা তুলে ধরার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলায় সাজা-পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতিও তুলে ধরা হয়। চিঠিতে বলা হয়েছিল, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির মতো এক তরফা আরেকটি নির্বাচনের পথে অগ্রসর হচ্ছে সরকার।

হয়তো এসব বিবেচনায় জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের রেকর্ড রয়েছে বিশ্ব ইতিহাসে। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ এই সংস্থা হস্তক্ষেপ করলে বাংলাদেশেও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব। এখন দেখার বিষয়, এই বৈঠকে জাতিসংঘ বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতটুকু আন্তরিক এবং বিএনপি’ইবা কূটনৈতিকভাবে কতটুকু সফল হয়।