ইকোনিমস্ট নামের এক বেহরম পত্রিকা খবর বাইর করছিল ঢাকা নাকি বসবাসের অযোইগ্য দ্বিতীয় শহর। সে বিষয়ে পরে আসতেছি, যোগ্য যে শহরটার নাম তারা বলছে সেইটা বড় দিলে লাগছে। ভিয়েনা। শরাবের জইন্য যে শহর এখন বাংলায় বিখ্যাত। আর আনন্দের বিষয় হইতেছে এই ভিয়েনারে বিখ্যাত করার পিছনের মূল আদমি আমাগের প্রাণ প্রিয় সেফু দা! ইকোনমিস্ট আমাগের বেইজ্জ্যতি করতে চাইছিল, কিন্তু তারা এইটা বুঝে নাই যে, জায়গামতন আমরা আটাইশ বছর আগেই সেফুদারে ফিট কইরা রাখছি। তিন বেলা খানা খাওয়া আদমি কি এমনে এমনেই কয় আমাগের?
ঢাকারে বসবাসের অযোগ্য কেন বললো সেইটা একটা রহস্য। লাগে বেকুব আদমিরা আমাগের ইনোভেটিভ আইডিয়াগুলারে ঠিক মত বুঝতে পারতেছে না। এই যেমন ধরেন বাদলার কাল চইলতেছে। এই সময়ে বাদলা মানেই কোমর সমান পানি। তাগোর কাছে লাগছে যে এইটা বসবাসের অযোগ্যতা! এগোরে বুঝাবে কিডা যে আমাগের যে পার্টি ক্ষেমতায় আছে তাগের মার্কাই নৌকা! এখন পানিই যদি না থাকে নৌকা কি আসমানে উড়বে? আজব চিন্তা। নৌকা কই চলে, কেমনে চলে অাদৌ চলে কিনা বুঝানোর জন্য হলেও তো পানির দরকার!
তারপর আরেক সমস্যা হইতাছে যায়া শব্দ। আপনের কানের ডক্তরের ফিসের খবর তো জানা নাই, শব্দরে বানায়া দিছে দূষণ! আরে বাসের ভেপু হইতেছে যায়া কানের ফ্রি ট্রিটমেন্টের দিল দরাজ ব্যবস্থা। এগুলান গবেষণা করে কি খায়া? কয় আমাগের ম্যানহলের ঢাকনা বলে খোলা থাকে। এইটা খোলা রাখার উপকারিতা জানে? শুকনার দিনে ধরেন জেনারেশন থ্রিজির পুলাপাইন দিক বেদিক না চায়া হাটা দেয়। ইরাম বলদা মার্কা হাটার ফল যে কতটা অন্ধকার হইতে পারে সেইটা বুঝানোর জন্য এইটা অন্যতম সহীহ ব্যবস্থা। যে একবার সেধাইছে ঐ দ্বিতীয়বার হাটনের সময় মুবাইল টিপনের সাহস করছে না। কোন দেশ ইরাম ফ্রি তে এত বড় শিক্ষা দেয়!
তারপরে কয় ঢাকায় বলে বেহরম জ্যাম! এই জ্যামের উপকারিতা বইলে শেষ করা যাবে না। পয়লা ধরেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এই জ্যাম হইতেছে সবচায়া কার্যকর পদ্ধতি। তিরিশ মিনিটের রাস্তা রাস্তায় তিন ঘন্টা ওম দিলে মোহাব্বতের ম-ও বাইর হইব না দিল থাইকা। বিনা খরচে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার সহীহ একটা সিস্টেম নিয়া প্রশ্ন খাড়া কড়ায় দেয়নডা সহীহ হইছে না!
যাই হোক। এখন মূল কথা হইতেছে বসবাসের অযোগ্য ঢাকায় থাইকাও আমাদের চান্দি চাদের মতন ঠান্ডা থাকলেও ভিয়েনায় বইসা আমাদের বিখ্যাত শব্দ বমারু সিফাত উল্লাহ ওরফে সেফু দা কেন বারবার উত্তেজিত হয়া যান? ভিয়েনার নির্মল বাতাসেও কেন অক্সিজেনের বদলে সরাব টানেন? মধুর শব্দের বদলে কেন গালির নহর বয়ায়া দেন? এর মূলে হইতেছে ঢাকা!
টাস্কি খাওনের কিছু নাই। মালটারে আটাইশ বছর আগে এক্সপোর্ট করা হইলেও তিনি এখনো ঢাকার প্রতি তার গভীর প্রেম ভুলতে পারেনন নাই। যার ফলে যখনই ভিয়েনায় সুন্দর লেকের পাড়ে নির্মল বাতাসে ফুলের ঘ্রাণ নিতে যান নাকে আইসা লাগে বুড়িগঙ্গার পঁচা পানি গন্ধ! ঢাকায় যেইখানে খুশি গাড়ি পার্কিং কইরাও দিব্যি গায়ে হাওয়া লাগায়া ঘুরতে অভ্যস্ত সেফু দা যখন ভিয়েনাতে বসেও একই কাজ করতে যায়া টিকেট পান পুলিশের তখন আর তিনি মিজাজ ঠান্ডা রাখতে পারেন না, শুরু হয় শব্দ বোমা! এই যে বাঙ্গালী জাতীকে নিয়ে, নেতাদের নিয়ে তার ক্রমাগত শব্দ বোমা, সেটি কিন্তু একটা মারাত্মক দুঃখ থেকেই, সেইটা হইতেছে তিন বেলা ভাত খায়াও যখন বাঙালি এত আরামে আছে, দেইখা সেফু দা ভেনিসে বইসাও ঢাকার গন্ধে ঘুমাইতে পারতেছেন না! এই অবস্থায় কেমনে মিজাজ ঠিক থাকে?
আর তার ঐতিহাসিক শরাব, যা তিনি সর্বরোগের ঔষধ বলে প্রচার করেন সেইটা আসলে আর কিছুই না, ওয়াসার পানি! আপনে বিনা ফিল্টারে একবার খায়া দেইখেন ভাই, তিন দিনের কমে যদি নিশা উতরাইছে বইলেন আমারে। এজন্য সেফু দা বারবার বাংলা কম দামি শরাবের বদলে দামি শরাব খাইতে বলেন। ডাইরেক্ট ওয়াসার নাম নিলে তারা আবার গোস্সা করবে কি না! একবার পেটে পরলেই বুঝবেন এই ঔষুধের কি গুণ!
তিনবেলা ভাত খাওয়া জাতি এখনো সেফুদার মর্ম বুঝল না! বেচারারে বাঁশের কঞ্চি দিয়া আগা কাইটা লাইনে আনার চেষ্টার পরেও তিনি যে সামান্য বদলান নাই, এইটাও একটা মেসেজ। বাঙালির মত ত্যাড়া জাতি দ্বিতীয়টা নাই। অতএব, এই ইকোনোমিস্ট ফিস্ট যতই জরিপ কইরা আমাগেরে বসবাস অযোগ্য বলুক না কেন, আমরা সামান্যও বদলালো না। আর এ ক্ষেত্রে আমাদের উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা, ভিয়েনার গর্ব সেফু দা!