ডিসেম্বরে নির্বাচন, জনগণ কি ভোট দিতে পারবে?

ডিসেম্বরে নির্বাচন, জনগণ কি ভোট দিতে পারবে?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মুখ খুললেন নির্বাচন কমিশন। এবছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (সচিব) হেলালুদ্দীন আহমদ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তার নিজ কার্যালয়ে একথা জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের স্কুল শুরু হয়ে যাবে। সে সময় নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হবে। তা ছাড়া ডিসেম্বরের শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের ছুটি থাকে।” তিনি জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় ৮০ ভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে।

ই্ভিএম নিয়ে ইসি সচিব বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার পরিকল্পনা আছে ইসির। সে লক্ষ্যে দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে ইসি। নির্বাচনের আগে আইন পাস, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতসহ সবকিছু ঠিক থাকলে সংসদ নির্বাচনের এক-তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম ব্যবহার করার মতো সক্ষমতা থাকবে ইসির।”

নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, ৩০ আগস্ট ইভিএম নিয়ে আলোচনা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হলে মন্ত্রণালয়ে যাবে। আইন পাশ হলে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কথা বলা হবে।

নির্বাচনের কথা উঠলে উঠে আসে দেশের রাজনৈতিক বর্তমান রাজনৈতিক সংকট। রাজনীতির বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করেন নানান সমস্যার। কিছুদিন আগেও নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়ম হবে না- এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ নিয়ে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী তাকে দায়িত্বহীন কথা বলার অভিযোগে এক তরফা শাসিয়েছেনও। কিন্তু তাতে কি আদৌ জনগণের আস্থা ফিরেছে!

অন্যদিকে, দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি’র প্রধান কারবন্দি। নির্বাচনের আগে তাকে মুক্তি না দিলে তাই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোন প্রশ্নই ওঠেনা। আবার তাদের সাথে আলোচনা নিয়েও একটা বিশ্রী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকার পক্ষ থেকে, কখনো বলা হচ্ছে- আলোচনায় বসবো, কখনো বলা হচ্ছে বসবো না। আবার মাত্র ক’দিন আগেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরকম ঘোষণা দিলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারে বিএনপি’র থাকার কোন সম্ভাবনা নেই।

তাহলে জনগণ ধরে নিতেই পারে, এবারের নির্বাচনও ২০১৪ সালের গতিতে সামনে অগ্রসর হবে আর তৈরি হবে তাদের ভোট দেয়া নিয়ে আশঙ্কা। অবশ্য দেখার বিষয় এই চার মাসে কি ঘটে? আর নির্বাচন যদি ডিসেম্বরে হয়ও তাহলে নির্বাচন কমিশন কিভাবে পরিস্থিতি সামলান? আর সিটি নির্বাচনের অনিয়মগুলো ফিরে ঝেড়ে ফেলে স্বচ্ছ নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।