রোহিঙ্গা সংকটের এক বছর পরে এসে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ । ওই প্রতিবেদনে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের উপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক খবরে জানা যায়, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার।
মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য ২০১৭ সালের মার্চে জাতিসংঘ একটি নিরপেক্ষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে। তদন্তের সময় জাতিসংঘের এই মিশনটি রাষ্ট্রীয় বাধায় মিয়ানমারে প্রবেশ করতে পারেনি। যার ফলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ, স্যাটেলাইট ইমেজ, ছবি এবং ভিডিও’র উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয় যা আজ সোমবার প্রকাশিত। রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতার বিষয় অনুসন্ধানের জন্য কয়েক’শ মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে রাখাইন ছাড়াও কাচিন ও শান অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ছাড়াও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাখাইন অঞ্চলে প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকির তুলনায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ অনেক বেশি অসম ছিল। সেখানে মিয়ানমারের শীর্ষ ছয়জন কর্মকর্তার বিচারের দাবি তোলা হয়েছে। সহিংসতা নিষ্পত্তিতে হস্তক্ষেপ না করায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র কড়া সমালোচনাও করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্ট মাসে সামরিক প্রয়োজনের অজুহাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী মুসলমান অধ্যুষিত রাখাইন অঞ্চলে হত্যা, গণ-ধর্ষণ, শিশুদের উপর হামলা এবং পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মতো অপরাধে লিপ্ত হয়। যার ফলে ওই সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত। সাত লাখেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।