বন্যায় বিপর্যস্ত ভারত

বন্যায় বিপর্যস্ত ভারত

বিগত একশ’ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির শিকার হয়েছে ভারতের কেরালা রাজ্য। ভারী বর্ষণজনিত এই বন্যায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩৭০ জন। উদ্ধার করা হয়েছে ৭ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৯ জনকে এবং উদ্ধারকাজের জন্য ৫ হাজার ৬৪৫টি ক্যাম্প করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম।

আজ সোমবার যদিও কেরালার বন্যা পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে। রাজ্যজুড়ে জারি করা রেড অ্যালার্টও তুলে নেয়া হয়েছে। গতকাল রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কেরালার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যায় আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে ও ত্রাণ সেবা দিতে দেশটির জাতীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক বসেছে। গত ১৬ আগস্ট থেকে পরপর চারদিন বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, বিমান পরিবহন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। বৈঠক চলাকালীন সময়ে কেন্দ্রীয় সচিব পিকে সিনহা সব মন্ত্রণালয়ে আপাতকালীন খাদ্য, পানি, ঔষধ সরাবরাহ ও বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিরক্ষা, আধা সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার, বিমান ও মোটরবাইকে চলছিল উদ্ধার কাজ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৫টি হেলিকপ্টারসহ ৩৮টি হেলিকপ্টার উদ্ধার কাছে অংশ নিয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলেছে উদ্ধারকাজ।

উদ্ধার কাজে ব্যস্ত ভারতীয় সেনাবাহিনী

বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে আশ্বাস দিয়েছে অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫০০ কোটি টাকা ত্রাণ ঘোষণা করেছেন। শিবসেনার সকল সাংসদ ও বিধায়ক তাদের একমাসের বেতন ত্রাণ হিসেবে দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষও কেরালা-কলকাতা দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করেছে যা আজ থেকে চলবে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে কেরালার পর পাশ্ববর্তী দুই রাজ্য কর্ণাটক ও তামিলাড়ুতেও ভারী বর্ষণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। কর্ণাটকে ভেসে গেছে ৮০০ এর বেশি ঘরবাড়ি এবং চার হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে অস্থায়ী শিবিরে। অন্য রাজ্য তামিলানাড়ুর ১৩টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। সেখোনে ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এই দুই রাজ্যে নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত আটজন।

অন্যদিকে বন্যার পরবর্তী পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে মাঠে নেমে পড়েছে ভারতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কেরালা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা অনিল ভাসুদেবান বলেন, আমরা ত্রাণ শিবিরে রোগ সংক্রমণের সাথে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত আছি। ইতোমধ্যে প্রতিরোধক ঔষধ বিতরণ শুরু হয়েছে।