নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলাকালে পুলিশের কাজে বাধা এবং গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৫২ শিক্ষার্থীর ২৫ জনের জামিন দিয়েছে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘাত, ভাঙচুর, উসকানি ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এখন পর্যন্ত ৫১টি মামলায় ৯৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫২ জন। এই তালিকায় রয়েছে চারজন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীও। বাদ যায়নি শিশু। এই চারজনের মধ্যে দু’জন শিশু হিসেবে প্রেরিত হয়েছে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে।
আজ রবিবার ঢাকার আদালতে ২৫ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়। দুপুরে শিক্ষার্থীদের আইনজীবীরা জামিনের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে আইনজীবী আদালতের কাছে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, এসব ছাত্রের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। মামলার এজাহারেও তাদের নাম নেই। সন্দেহজনকভাবে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার সবাই ছাত্র।
শুনানি শেষে আজ আবেদন করা ২৫ জনই জামিন পেয়েছে। বাড্ডা ও ভাটার থানার মামলায় গ্রেফতার ২২ জনের মধ্যে ১৬ জন জামিন পেয়েছে। অন্যদিকে ধানমন্ডির আলাদা তিন মামলায় আটক ৯ শিক্ষার্থীকে জামিন দেয়া হয়েছে। তাদের জামিনের কাগজ কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
বাড্ডার মামলায় জামিন পাওয়া ১০ শিক্ষার্থী হলেন রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এ এইচ এম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, জাহিদ হক ও হাসান। আর ভাটারা থানার মামলায় জামিন পেয়েছেন আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার ও সাখাওয়াত হোসেন। ধানমন্ডির মামলায় জামিন পাওয়া নয় শিক্ষার্থী হলেন সোহাদ খান, মাসরিকুল আলম, তমাল সামাদ, ওমর সিয়াম, মাহমুদুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, ইকবাল হাসান, মিনহাজ রহমান ও নাইমুর রহমান।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আটক বাকি শিক্ষার্থীদের কারও কারও জামিন শুনানি আগামীকাল হতে পারে। কিন্তু কথা হচ্ছে, আগামীকাল যদি তাদের জামিন না হয় তবে এই শিক্ষার্থীরা কি ঈদ করবে কারাগারে। বিনা অপরাধে কারাবরণ করা এইসকল শিক্ষার্থীর স্বজনেরাইবা কি করে ঈদের আনন্দে শামিল হবে?
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় বাসচাপায় স্কুল শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘নিরাপদ সড়ক’র দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সে আন্দোলনে পুলিশ-ছাত্রলীগ যৌথ আক্রমণে আহত হয় শিক্ষার্থীরা। সেদিকে লক্ষ্য না করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের।