চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী

চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী

চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী  অটলবিহারী বাজপেয়ী। দীর্ঘ অসুস্থতার পরে ৯৩ বছরে নয়া দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এআ্ইএমএস) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। অনেক দিন ধরেই বাজপেয়ীর একটি কিডনি অচল ছিল। গত কয়েক বছর ধরে তিনি স্মৃতিবিভ্রমে ভুগছিলেম । অসামান্য বাগ্মীতার জন্য খ্যাতি ছিল যার, সেই অটলবিহারী বাজপেয়ী গত কয়েক বছর ধরে কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়েছিলেন অনেকটাই। কিডনি, মূত্রনালী ও বুকে সমস্যা নিয়ে বিগত ১১ জুন থেকে টানা হাসপাতালেই ছিলেন তিনি। আজ হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি।

২০০৯ সালে স্ট্রোক করার পর তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে শুরু করে। সেই থেকেই বাকশক্তিও হারাতে শুরু করেন বাজপেয়ী।গত তিন দিনে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষে রাখা হয়েছিল।

গতকাল বুধবার দুপুর থেকেই অটল বিহারী বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হতে শুরু করে। বুধবার দুপুরে তাকে দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিজেপির অন্যন্য মন্ত্রীরা।

১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯— তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। প্রথম দফায় তেরো দিন, দ্বিতীয় দফায় তেরো মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়া দেশ বাজপেয়ীকে মনে রাখবে এক দুর্দান্ত সাংসদ, কবি, বাগ্মী ও গণতন্ত্রের এক অতন্দ্র প্রহরী হিসেবেও। যদিও ২০০৪ সালে ‘হিন্দুত্বভা’ এবং ভারতীয় জাতীয়তা কে একই বিষয় বলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।

১৯২৪ সালে গ্বালিয়রে জন্ম বাজপেয়ীর। বাবা কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ী কবি ছিলেন। দীর্ঘ এবং ব্যস্ত রাজনৈতিক জীবনের ফাঁকে অবসর খুঁজে নিয়ে অটলবিহারীও কাব্যচর্চা করতেন নিয়মিত।  ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রথম সভাপতি হন ।১৯৯৬ সালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র হার হয়। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রধানবিরোধী দলনেতার পদ নিতে অস্বীকার করেন তিনি। ক্রমশ সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরেও সরিয়ে নেন নিজেকে। এবার পার্থিব জীবন থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিলেন।