‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ আইনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে বিক্ষোভ

‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ আইনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে বিক্ষোভ

বিতর্কিত ‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ আইনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে এসেছে হাজার হাজার মানুষ। শনিবার ১১ আগস্ট ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুলসংখ্যক ইসরায়েলি নাগরিক রাজধানী তেলআবিবের রাস্তায় এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

গত ১৯ জুলাই ইসরাইলের সংসদে বিতর্কিত ‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ আইন পাস করে। যেখানে ইসরাইলকে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আইনের মাধ্যমে ইহুদি ছাড়া বাকি নাগরিকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। দেশটিতে প্রায় ১৮ লাখ ফিলিস্তিনিসহ কয়েকটি সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী রয়েছে।যা মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র আইন অনুযায়ী, তাদের সবাই ইসরাইলের বৈধ নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও দেশের দ্বিতীয় শ্রেণীর অধিবাসী।

বিতর্কিত এ আইনের বাতিল চেয়েই শনিবার বিক্ষোভ করেছে অসংখ্য মানুষ। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী এক ফিলিস্তিনি সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ইহুদি ও ফিলিস্তিনিরা একসঙ্গে আন্দোলন করছে। এটা অবাক করার মতো বিষয়। যারা গণতন্ত্র ও আইনের সমতায় বিশ্বাস করে, তাদের জন্য এটা আসলেই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।’ এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারী আরেক ইহুদি। তিনি একই সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আইনের চোখে ইসরাইলের সব নাগরিক সমান হওয়া উচিত। বিপুলসংখ্যক ইহুদি মনে করে, সংখ্যালঘুদেরও সমান অধিকার পাওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। এটা ইহুদি রাষ্ট্র। কিন্তু শিক্ষা, সেনাবাহিনী, বিশ্ববিদ্যালয়, পার্লামেন্টসহ সব জায়গায় ইসরাইলের সব নাগরিকের সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

বিতর্কিত ‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার রাজধানী তেল আবিবের রাস্তায় নেমে আসে হাজা হাজার মানুষ। ছবি: CTV News

গতমাসে পাস হওয়া ওই আইনে ইহুদিদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ওই আইনের মাধ্যমে হিব্রু ইসরাইলের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে ইসরাইলে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনির ভাষা আরবী দ্বিতীয় ভাষায় পরিণত হয়েছে। জাতি-রাষ্ট্র আইন পাস হওয়ার আগে হিব্রু ও আরবি উভয়ই ইসরাইলের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এছাড়া, দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূ-খণ্ডে ইহুদি বসতি স্থাপনের বিষয়টিকে নতুন আইনে ইসরাইলের জাতীয় স্বার্থ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে জোরপূর্বক বসতি স্থাপনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ইসরাইলের পার্লামেন্ট সদস্য ওমর সুলতান বলেন, এই আইন আমাদের বিরুদ্ধে, আরবি ভাষা ও শান্তির বিরুদ্ধে। এর মাধ্যমে ইসরাইলে আমাদের ভবিষ্যৎ সংকটের মুখে পড়েছে। অথচ আমরাই এই ভূ-খণ্ডের প্রকৃত অধিবাসী।

শুধু ‘ইহুদি জাতি-রাষ্ট্র’ নয় বরং এর ইসরায়েলি সরকারের একতরফাভাবে গ্রহণ করা সিদ্ধান্তগুলোও যু্ক্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে এই আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে সংখ্যালঘু দ্রুজ জনগোষ্ঠী।