সম্প্রতি ভারতের আসাম রাজ্যে প্রকাশিত নাগরিক নিবন্ধনের খসড়া নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন এই নাগরিক নিবন্ধনে বাদ পড়তে যাচ্ছে ওই অঞ্চলের ৪০ লাখ বাসিন্দা। যাদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি এবং মুসলমান। এই নিবন্ধনের ফলে পরিচয়হীন হয়ে পড়বে এই পুরো ৪০ লাখ মানুষ। আসামের এ সংকট নিয়ে তাই দুশ্চিন্তায় পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দল তৃণমূল কংগ্রেস পালন করতে চাইছে ত্রাতার ভূমিকা।
২ আগস্ট নতুন এই এনআরসি’র প্রতিবাদ জানাতে তাই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা পৌঁছেছিলেন আসাম রাজ্য পর্যন্ত। কিন্তু আসামের কাছাড় জেলায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় তাদেরকে বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয় তাদের। নেতাদের শিলচরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখার কথা ছিল।
তৃণমূলের এই পদক্ষেপকে অনেকেই আবার রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাভাষী অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় সমর্থন তৈরির উদ্দেশ্যেই আসাম প্রসঙ্গে নাক গলাচ্ছেন মমতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারাও বসে নেই। মুখ খুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও। তিনি বলেন, ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা আসাম সংকট। তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় যাদের নাম নেই, তারা দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন।
আগেই স্পষ্ট হয়েছে, নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে থাকা এই অর্ধকোটি মানুষ বিশেষত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। সেক্ষেত্রে আসাম সংকটের সাথে বাংলাদেশ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, সংকটকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা ভারতের রাজ্যগুলো অশান্ত হতে পারে। সবচেয়ে বড় সংকট হবে, যদি আসামের বাঙালিদের পুশ করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এটি করলে আসামের বাঙালি সংকট রোহিঙ্গা সমস্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে। কারণ, তাদের ভাষা, সংস্কৃতি আমাদের মতোই।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা, ভারতের নতজানু নীতি অনুসরণ করলেও ভারত বাংলাদেশকে শত্রুরাষ্ট্র বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে একটুও পিছপা হবে না। ইতোমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন, আসামের ঘটনায় বাংলাদেশকে শত্রুরাষ্ট্র বানানো হচ্ছে।