আতঙ্ক যেন পেয়ে বসেছে বাংলাদেশকে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ধানমন্ডির বাসা থেকে গাড়িতে করে শহিদুল আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শহিদুল আলম দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্রী। বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী মিডিয়াতে তিনি নিয়মিত কলামও লিখেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহিদুল আলমকে ধানমন্ডি ৯/এ সড়কের বাসা থেকে নিয়ে যায় ডিবির লোকজন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে জানান, শহীদুল আলমকে তার ধানমণ্ডির বাসা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল আটক করেছে। শিক্ষার্থীদের চলমান বিক্ষোভ নিয়ে ফেসবুকে দেয়া একটি পোস্ট নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দৃকের জেনারেল ম্যানেজার এএসএম রেজাউর রহমান বলেন, রোববার রাতে তার নিজ বাসা থেকে একদল দুর্বৃত্ত তাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। রাতে তিনি ধানমণ্ডি মডেল থানায় অপহরণের মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছে।
রেজাউর রহমান বলেন, শহীদুল আলম ধানমণ্ডির ৯ নম্বর সড়কের ৩২ নম্বর বাসায় থাকেন। রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে একটি হাইএস মাইক্রোবাসে কয়েকজন যুবক তার বাসায় আসেন। এরপর তারা বাসা থেকে জোরপূর্বক শহীদুল আলমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তারা বাসার সিসিটিভির ফুটেজও নিয়ে যান। যে মাইক্রোবাসে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেটির গায়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের লোগো লাগানো ছিল বলে তিনি জানান।
‘ডিবি পুলিশ’ পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢোকে আটককারীরা। শহিদুল আলমের সহকর্মী সাইদিয়া গুলরুক বলেন, “আমরা একই বাসার তৃতীয় তলায় থাকি। শহিদুল আলম থাকেন চতুর্থ তলায়। রাত সাড়ে দশটার দিকে হঠাৎ চিৎকার শুনে নিচে এসে দেখি দারোয়ানরা ভীত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।”
আমরা সেখানে সিসি ক্যামেরা ও ইন্টারকম ভাঙা দেখতে পাই। তখন দারোয়ানরা আমাদের জানায়, ১২-১৩টা গাড়িতে আসা ৩০-৩৫ জন লোক শহিদুল ভাইকে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে ধানমণ্ডি মডেল থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই মহিদুল বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে তার স্ত্রী একটি অভিযোগ করে গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এসআই আলমগীর হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখছেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রোববার চলমান নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে কাতার ভিত্তিক সংবাদ চ্যানেল আলজাজিরায় সাক্ষাৎকার দেন শহিদুল আলম। সেখানে তিনি নিরস্ত্র ছাত্রদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের স্বশস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন।