আল-জাজিরাকে কী বলেছিলেন শহিদুল আলম

আল-জাজিরাকে কী বলেছিলেন শহিদুল আলম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে একটি সাক্ষাৎকার দেন বিশ্বখ্যাত ফটোগ্রাফার ও সমাজকর্মী শহিদুল আলম। এর পরেই তাকে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, সাক্ষাৎকারের জের ধরেই তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দেশে বিদেশে এই ঘটনায় অনেক নাগরিক, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সমাজকর্মীরা তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

রোববার রাতে শহিদুল আলমকে জনা বিশেক সাদা পোশাকধারী পুলিশ বাসা থেকে ‍তুলে নিয়ে গেছে। প্রথমে সামাজিক মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। তার নিকটজনরা জানিয়েছেন, ডিবি পুলিশ তার বাসার সিসিটিভি ফুটেজও নিয়ে গেছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তা কি শুধুমাত্র সড়কের নিরাপত্তার অভাবেই শুরু হয়েছে নাকি এর পেছনে আরো বড় কিছু রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে শহিদুল আলম বলেন, একটি অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে, যারা আসলে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই শাসন করছে, ব্যাংক লুট করছে, মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে, বিরোধী মতের লোকজনকে গুম করা হচ্ছে, সরকারের প্রত্যেকটি স্তরে ঘুষ, এসবই চলছে দেশে। যে আবেগ বা ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটেছে এই আন্দোলনে তা আসলে শুধুমাত্র নিরাপদ সড়কের দাবিতে নয় এসবের কারণেও হয়েছে।

আলজাজিরাকে দেয়া সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে শহিদুল আলম চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের নিকটজনেরা সরকারি চাকরি পাচ্ছে, চরম একটা বৈষম্য রয়েছে সেখানে। আন্দোলনকারীরা সেটার সংস্কার করতে বলেছে সেটাও প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, অনেক দিন হয়ে গেলেও তা বাস্তবায়ন করেননি।”

বিশ্বখ্যাত এই আলোকচিত্রী বলেন, “আজকে রাস্তায় যা হচ্ছে এটার কারণ খোঁজা হচ্ছে অথচ অদ্ভুত ব্যাপার যে পুলিশ এই নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করতে স্বশস্ত্র ছাত্রনেতাদের সহযোগিতা চেয়েছে। এবং ঠিক সেমতে আজ আমি নিজেও রাস্তায় দেখেছি নিরস্ত্র ছাত্রদেরকে অস্ত্রধারীরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং পুলিশ তা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে এবং তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে একযোগে হামলা করছে।”

সরকারের হিসেব নিকেশে ভুল হচ্ছে বলে মন্তব্য করে শহিদুল বলেন, আপনি পুরো জাতিকে দাবায়ে রাখতে পারবেন না। সামনে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে, তারা জানে যে সুষ্ঠু ভোট হলে তারা নিশ্চিত হারবে। এ কারণে তারা যা করছে সেটি হলো, বিরোধী মতের সবাইকে শত্রু জ্ঞান করে তাদের ধ্বংস করা হচ্ছে। পুরো শাসন কাঠামোর সব কলকব্জা ব্যবহার করে স্বশস্ত্র পেটোয়া বাহিনী রেখে তাদেরকে শেষ করে দিতে চাইছে।