নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজ শনিবারও ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় জড়ো হতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ সপ্তম দিনের মতো রাস্তায় নেমেছে তারা। বিআরটিসির বাস ছাড়া রাস্তায় অন্য কোনো বাস চলতে দেখা যাচ্ছে না। অন্যান্য যানবাহন চলাচলও কম রয়েছে।
আজ সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের দিকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা শান্তিনগর মোড়ে জড়ো হয়। সেখানে ২০ জনের মতো শিক্ষার্থীকে জড়ো হতে দেখা যায়। একই সময় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ রাইফেলস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা ঝিগাতলা মোড়ে এসে জড়ো হয়। মালিবাগে আবুল হোটেলের সামনে অবস্থান নেয় একদল শিক্ষার্থী।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে আজও শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে অবস্থান নিয়েছে। সকাল ১০টার পর তারা গোলচত্বরে হারুন মোল্লা ট্রাফিক কন্ট্রোল বক্সের সামনে অবস্থান নেয়। সড়কের চারপাশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গাড়ির কাগজপত্র ও গাড়ির লাইসেন্স যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে।
ঢাকায় বাস বন্ধ
রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে আজ শনিবারও কোনো যাত্রীবাহী বাস চলছে না। ফলে নগরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরশেনের (বিআরটিসি) কয়েকটি বাস চললেও সেগুলোতে উঠতে হচ্ছে অনেক কষ্ট করে। সকাল সোয়া ৯টা পর্যন্ত মিরপুর রোড, রোকেয়া সরণি, সাতমসজিদ রোড, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, মানিক মিয়া এভিনিউ, প্রগতি সরণি, এলিফ্যান্ট রোডে কোনো গণপরিবহন দেখা যায়নি।
সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস চলাচল করছে। সেগুলোও অনেক কম। বেশি ভাড়াও অনেক দুর্ভোগে অফিস ও গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী শিমুর জানান, আমি বসুন্ধরা এলাকায় যাব, কোনো গাড়ি নেই। দুই একটি বিআরটিসির বাস আসছে। তবে সেখানেও উঠতে পারছি না। পরে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিলাম।
উত্তরা থেকে বিশ্বরোডে কর্মস্থলে যাবেন শামসুল হাবিব। তিনি বলেন, বাসের অপেক্ষায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছি। কখন গন্তব্যে যেতে পারব জানি না।
গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে ঢাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় বাস চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত।
এরই মধ্যে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিরাপত্তার কারণে তারা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে।