গত রবিবার ২৯ জুলাই বাস চাপায় রাজধানীতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর জের ধরে সারাদেশে বিক্ষোভে নামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিবেক নাড়া দেওয়া স্লোগানের সাথে সাথে তারা ঢাকার ট্র্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের শৃঙ্খল নিয়ম পালন করে দেখিয়ে দিয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির লাইসেন্স চেক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আজ আন্দোলনের সপ্তম দিনে এসে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার শিকার হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে জাতীয় সংবাদ মাধ্যম পেরিয়ে এই আন্দোলনকারীদের উপর হামলা হয়ে উঠেছে বিশ্ব মিডিয়ার খবরের বিষয়।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, ন্যায় বিচারের জন্য আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে নেমেছে। এবং আজ সপ্তম দিনের মতো তারা তাদের দাবি আদায়ের জন্য অবস্থান করছে।
বিবিসি বাংলা আজ শনিবার জিগাতলায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার উল্লেখ করে এক প্রতিবেদনে জানায়, ঢাকার জিগাতলা ও সায়েন্স ল্যাবরেটরী এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সায়েন্স ল্যাবরেটরীতে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পাশাপাশি পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন দুপুরে একদল যুবক হেলমেট পরে এ হামলা চালায় এবং এ সময় সেখানে ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ইরানের সংবাদ মাধ্যম পার্স টুডে’র বাংলা সংস্করণের এক প্রতিবেদনেও উঠে আসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনা। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই নিগ্রহের শিকার না হয় সেটা খেয়াল রাখার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে আজ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মিরপুর এবং জিগাতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা সরকারের ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের সদস্য।
‘দুঃখিত, ৪৭ বছরের রাষ্ট্রীয় ক্ষত মেরামতির কাজ চলছে!’ শিরোনামে আজ প্রতিবেদন করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রত্রিকা ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ আন্দোলনে সহিংসতার কথা তারাও ফলাও করে উল্লেখ করেছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাস চাপায় দুইজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এতে করে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়। তারা আরও উল্লেখ করে, পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দল এ হামলা চালিয়েছে।
এছাড়াও এএফপি, রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, সিনহুয়া, ডন এর মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আন্দোলনের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।