ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এভিগডর লিবারম্যান বৃহঃস্পতিবার এক সরকারি আদেশে গাজায় কেরেম শ্যালোম ক্রসিং দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের জ্বালানি পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেন। ফলে গাজায় গ্যাস ও জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। খবর: আলজাজিরা’র।
গত জুলাইয়ে এক সপ্তাহের জন্য কেরেম শ্যালোম ক্রসিং বন্ধ করে দিয়ে পুনরায় খুলে দেবার মাত্র দুই সাপ্তাহের মধ্যেই আবার গাজার লাইফ লাইন খ্যাত ‘কেরেম শ্যালোম ক্রসিং’ বন্ধ ঘোষণা করা হল।
জুলাইয়ের সপ্তাহব্যাপি চলমান নিষেধাজ্ঞাকে জাতিসংঘ ‘ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের সামষ্টিক শাস্তি’ বলে অভিহিত করেছিল। তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিন সরকার ও গাজার নিয়ন্ত্রক হামাস এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে উড়ে যাওয়া শত শত আগুন ঘুড়ির কাছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী পর্যুদুস্ত হবার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত আসল। ঘুড়ির লেজে ককটেল বেঁধে আগুন ধরিয়ে সুতো কেটে দিলে তা গিয়ে পড়ছে দখলদার ইসরায়েলি সীমানায়। এতে এই পর্যন্ত কয়েক লাখ ডলারের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। ঘুড়ির মোকাবেলায় বিশেষ ড্রোন মোতায়েন করেও তেমন সফলতা আসেনি। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের মোকাবেলায় আগুন ঘুড়িই গাজার জনগণের আপাত হাতিয়ার।
ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদেই এই ঘুড়ির ব্যবহার আন্দোলনকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গত ৩০ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এ পর্যন্ত ১৫৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে একজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের পর থেকে গাজায় ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কট চলমান। কেবল জ্বালানি তেল নির্ভর কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রই সচল রয়েছে। গাজা চতুর্দিক থেকে দখলদার ইসরায়েল কর্তৃক পরিবেষ্টিত। কেবল রাফা ক্রসিং নামে মিসরের সাথে একটি ক্রসিং থাকলেও সেটাও বন্ধ থাকে প্রায় সব সময়ই। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভয়াবহ মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়ে হবে গাজা উপত্যকায়। খাদ্য প্রস্তুতকারী কারখানা ও হাসপাতালগুলো বিদ্যুৎ শূন্যতায় বিকল হয়ে পড়বে।