দৈনিক আমার দেশ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর বিএনপি-জামাতই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ। আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে হামলার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত ওরফে তুষার। জেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ উঠলেও তিনি বলেছেন দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে আসলে এর সঙ্গে কারা জড়িত।
আজ মঙ্গলবার শহরের একটি রেস্তেরায় দুপুর ১২টায় জেলা ছাত্রলীগ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে বলেছি আপনারা খুঁজে বের করেন কে দোষী। আমরা তো এই ন্যক্কারজনক ঘটনা চাই না। আমরা চাই সুষ্ঠু বিচার হোক। কারা হামলা করেছে দোষী বের হয়ে আসুক। দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে, কারা এর সাথে জড়িত।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইয়াসির আরাফাত। পাশে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ। পরে দুজনই সাংবাদিকদের বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন।
গত রোববার বিকেলে মানহানির মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়ায় গিয়ে হামলার শিকার হন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান। আদালত চত্বরে তার ওপর তিন দফায় এ হামলা হয়। ইট, পাথর ও লাঠির আঘাতে তার গাল, কপাল ও মাথার পেছনে কেটে যায়। পরে যশোর থেকে উড়োজাহাজে করে ঢাকায় এনে তাকে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মাহমুদুর রহমানের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এ হামলা চালিয়েছেন। বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা নীরব ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘এটা যে জামায়াত-বিএনপি ঘটিয়েছে, প্রশাসন একটু খোঁজ করলেই বুঝতে পারবে, আপনারাও (সাংবাদিক) টের পাবেন।’ আবার আরেকবার তিনি মাহমুদুরের ওপর সাধারণ আমজনতা ও দুর্বৃত্তরা আঘাত করেছে বলেও দাবি করেন।
হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানে ছাত্রলীগের কেউ ছিল না। জেনেছি, সেখানে মুখোশ পরা ছিল অনেকে। আসলে ছাত্রলীগ কখনো মুখোশ পরে হামলা করে না, এটা হামলা করে কারা- আপনারা অতীতে দেখেছেন, জঙ্গিরা চেহারা গোপন করে মুখোশ পরে হামলা করে। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসাবে আখ্যা করার জন্য এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য জামায়াত-বিএনপি এটা করার চেষ্টা করতে পারে।’
লিখিত বক্তব্যে ইয়াসির আরাফাত উল্লেখ করেন, তিনি নিজে মামলার বাদী তাই আদালতে গিয়েছিলেন। বিকেলে তিনটার মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি আদালত চত্বর ত্যাগ করেন। হামলার ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়। ছাত্রলীগ আদালত চত্বরে সকাল দশটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ছিল।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ বলেন, ‘বিএনপির মধ্যে একটা মতবিরোধ আছে। ধারণা করছি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মধ্যেই এই গ্যাঞ্জামটা হয়েছে। বিএনপির কোনো দুষ্কৃতকারীরা এটা করেছে। এবং সামনে নির্বাচন সেটা আমাদের ওপর দায়ভার দিতে চাচ্ছে।’