সিদ্ধান্তটি নিয়ে সমালোচনা হতে পারে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হচ্ছেও। কিন্তু বিসিবি সভাপতির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢালাও সমালোচনা করার আগে একবার একটু ভেবে দেখা দরকার। আচমকা শুনলে অন্যরকম মনে হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলে সিদ্ধান্তটি দেরিতে হলেও যথার্থ মনে হওয়া স্বাভাবিক।
আইপিএলের সর্বশেষ আসরের সময় মোস্তাফিজকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। সেখানে কিছু সাওয়াল ছিল। মোস্তাফিজ না দিলেও জবাবটা জনাব পাপনই দিয়ে দিলেন। যার পেছনে নিয়ত বোর্ড লগ্নি করছে তিনি একাধিকবার বৈদেশিক ঘরোয়া লিগ খেলতে গিয়ে যখন জখমসমেত ফিরে এসে দেশের খেলার সময় যখন মাঠের বাইরে বসে থাকেন সেটি কাহাতক ভাল লাগে?
আইপিএল, সিপিএল বা পিএসএল; যে আসরের কথাই বলি না কেন, বৈদেশিক এসব লিগে মোস্তাফিজের অবারিত খেলার যে সুযোগ তিনি পাচ্ছেন তার মূলে জাতীয় দলের হয়ে মোস্তাফিজের নৈপুণ্য। হ্যাঁ, আইপিএলে মোস্তাফিজ প্রথম আসরে রশনি জ্বালিয়ে জিতে নিয়েছিলেন সেরা উদীয়মানের পুরষ্কার। যার ফলে ডাক আসে কাউন্টি থেকেও। এরপরে তিনি দেশে ফিরেছিলেন জখম সাথে করে।
এরপর যাবতীয় চিকিৎসা পুনর্বাসন সবই হয়েছে বিসিবির তত্ত্বাবধানে। দ্বিতীয় মৌসুমেই ধার হারানো মোস্তাফিজকে ছুড়ে ফেলতে সামান্য দ্বিধা করেনি হায়দ্রাবাদ। তাতেও কিছু হয়নি। একই ঘটনা এ বছরেও দেখা গেল। আবারো সেই বিপিএল খেলতে গিয়ে আঘাত নিয়ে ফেরা, দেশের একাধিক সিরিজ মিস। এমতাবস্থায় বিসিবির এরুপ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলার কোনো কারণ নেই।
বৈদেশিক, বিশেষ করে আইপিএলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের নেয়ার অন্যতম মূল কারণ বাংলাদেশের বাজারটা ধরা। সাকিব-মোস্তাফিজদের খেলা থাকলেই যে বাঙালি দর্শকরা টিভি সেটের সামনে বসে পড়েন সেটি কিন্তু তারা বাংলাদেশের হয়ে খেলেন বলেই। অনেক বড় বড় নাম নিয়ে আইসিএল শুরু হলেও তা আইপিএলের কাছে মার খেয়েছিল কারণ আইসিএলের খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের অংশ ছিলেন না। এ বিষয়টি যদি অনুধাবনে কেউ ব্যর্থ হয় খেসারতটা তাকেই দিতে হবে।
তবে, এ নিষেধাজ্ঞা কোনো স্থায়ী সমাধান হবে না। বরং, দেশের খেলোয়াড়রা যেন দেশেই খেলেন সে জন্য বাড়াতে হবে ঘরোয়া লিগের মান। নতুবা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ হয়ে যাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। মোস্তাফিজ ইস্যুতে যে পরিস্থিতি মুখোমুখি বিসিবি হচ্ছে তা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একদমই নতুন। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তীতে এমন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি যেন আর সৃষ্টি না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে।