গরমে শরীরের সুস্থতা ধরে রাখা বেশ কষ্টকর। তার ওপর খাওয়া-দাওয়ার প্রতি আগ্রহ থাকে না কারও। বিশেষ করে শিশুরা স্পর্শকাতর হওয়ায় ডায়রিয়া এবং ফুড পয়জনিংয়ের প্রকোপ বেশি থাকে। আপনার আদরের সোনামনিকে এ ধরণের রোগ থেকে বাঁচাতে সচেতনতার বিকল্প নেই। তার নিয়মিত খাবারের প্রতি হতে হবে যথেষ্ট সচেতন।
শীতকালে শিশুর খাবার নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও, গরমের সময়ে কিছুটা অসুবিধা তো হয়ই। গরমে শিশুরা সাধারণত কিছু খেতে চায় না। এতে শিশু প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়, মা-বাবাও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। এই গরমে শিশুর খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করে হালকা, পুষ্টিকর, টাটকা এবং সহজপাচ্য খাবার রাখতে হবে। সেটা হতে পারে নরম খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ, সহজে হজম হয় এমন খাবার। গরমে শিশুর খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকা জরুরি।
শিশুদের খাবার ঘরে তৈরি করা ভাল,বাইরের কেনা খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এ সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ হতে পারে। তাই ঘরের তৈরি খাবার এ ধরনের ঝুকি থেকে রক্ষা করবে। কম বয়সে পানি শূন্যতার কারণে বাচ্চার স্মৃতি, শিখন ও চিন্তাভাবনার ক্ষমতায় ক্ষতি হতে পারে। তাই নিশ্চিত করুন আপনার শিশু যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করছে কি না। পানি যেন অবশ্যই বিশুদ্ধ হয় তাও লক্ষ রাখতে হবে। খুব ঠান্ডা বা খুব গরম পানি দুটোই শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তবে এড়িয়ে চলুন প্রিজারভেটিভ দেয়া ফলের জুস এবং কোমল পানীয়। লেবু, তরমুজ, বেলের শরবত বা ডাবের পানি পান করাতে পারেন।
প্রধান তিন বারের খাবারে বাড়াতে হবে সহজপাচ্য শাকসবজির পরিমাণ। সবুজ শাকসবজি গরমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। বাচ্চার খাবার তালিকায় চিচিঙ্গা, পেঁপে, কুমড়া, লাউ, কাঁচকলা রাখতে পারেন। রান্নায় বৈচিত্র্যের জন্য বিভিন্ন রংয়ের ক্যাপসিকাম ও ব্রুকলি ব্যবহার করতে পারেন। আপনার বাচ্চার শরীরের আমিষের চাহিদা মেটাতে প্রতিবেলায় ডাল, মাছ-মাংসও থাকতে পারে পরিমিত।
গরমে তরলের চাহিদা ও ভিটামিন মিনারেলের দৈনিক চাহিদা পূরণে ফল দারুণভাবে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরী। তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু ইত্যাদি শিশুদের জন্য অনেক উপকারী। কোনো শিশু যদি ফল ও পর্যাপ্ত পানি না খায় সে ক্ষেত্রে ঘরে তৈরি ফলের রস তরল, ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে।
গরমে শিশুর সঠিক যত্নের জন্য তাকে নিয়মিত গোসল, খাওয়া ও ঘুমানো প্রতিটি কাজ করতে হবে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী। যতটা সম্ভব শিশুদের ভাজাপোড়া ও তেল চর্বিজাতীয় খাবার কম খাওয়াতে হবে।