কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক মো. তারেক রহমান গত ১৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারেকের বাবা-মা।
সোমবার (১৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ তারেকের বাবা আব্দুল লতিফ ও মা শাহানা বেগম সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
মা শাহানা বেগম বলেন, ‘শনিবার রাত ৮ টার দিকে আমার মেয়ের সাথে কথা হয় তারেকের এক বন্ধুর সাথে। ওই বন্ধু বলেন, শাহবাগ এলাকায় তারেককে সাদা পোশাকের কিছু লোক অনুসরণ করছিল। এ কথা ফোনে বন্ধুকে জানানোর পরপরই তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়।’
শাহানা বেগম বলেন, ‘এরপর ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ঘুরেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল (১৫ জুলাই) রাত ১২ টায় শাহবাগ থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। আজ আবারও যাবো।’
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে কোথায় আছে তাকে বের করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ করছি।’
তারেকের বাবা আবদুল লতিফ জানান, তারেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে ঢাকায় বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ফার্মগেটে কনফিডেন্স নামের একটি কোচিং সেন্টারে পড়তেন তিনি। গত শনিবার রাত থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
তারেকের মা মোছাম্মৎ শাহানা বেগম বলেন, তারেকের এক বন্ধু জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে তারেক বন্ধুদের বলেছে কিছু লোক তার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে, তাকে ফলো করছে। পরে ওই দিন রাত থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আবদুল লতিফ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম পর্যায়েও তারেককে একবার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কোনো মামলা ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ও যখন কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করছিল, পরিবারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়। আমি বলি, তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, তুমি যেও না। ও বলে,“চাকরির জন্য আন্দোলন করছি”। তখন আমি বলি, ঠিক আছে তোমরা আন্দোলন করলে সরকার মেনে নিলে আমার আপত্তি থাকবে কেন?’
তারেকের বাবা বলেন, প্রথমে মধ্যবাড্ডায় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন তারেক। তবে সেখানেও পুলিশ তাঁর খোঁজখবর করছিল। পরে ওই বাসা ছেড়ে মেসে ওঠেন।
তারেক রাজনীতি করতেন কি না— জানতে চাইলে আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কেউ-ই রাজনীতি করি না। তবে আমাদের ছেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল বলে শুনেছি।
তিনি জানান, তারেক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন।
তারেকের বাড়ি বগুড়া শহরে। বাবা মুদি দোকান করেন। তারা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত বলে জানান তারেকের বাবা।