চার শর্তে নির্বাচনে আসতে পারে বিএনপি: মওদুদ

চার শর্তে নির্বাচনে আসতে পারে বিএনপি: মওদুদ

বিএনপিকে বাইরে রেখে আগামী জাতীয় নির্বাচন করার কোন ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বিএনপি’র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিসহ চার দফা শর্ত পেশ করেন।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জিয়া আদর্শ একাডেমী’ কতৃক আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।

চার দফা শর্তের মধ্যে রয়েছে- এক. বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, দুই. সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, তিন. ম্যাজেস্ট্রি পাওয়ার দিয়ে সেনা মোতায়েন করা, চার. নির্বাচন কমিশনের পুন:গঠন।

২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল সেরকম নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না উল্লেখ করে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বিনা চ্যালেঞ্জে আমরা কোন নির্বাচন হতে দেব না, আগামী নির্বাচনে আমরা থাকবো, আমরা নির্বাচন করবো।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় জেলখানায় রাখা হয়েছে। তাকে জেলখানায় রেখে বিএনপি কোনভাবেই আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। এ সময়ে ব্যারিস্টার মওদুদ আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অথর্ব, অক্ষম, অদক্ষ ও পক্ষপাতপূর্ণ একটি সংগঠন। সরকারের লেজুরবৃত্তি করাএদের কাজ। সরকারের স্বার্থ রক্ষার জন্যই এরা নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করে থাকে। গাজীপুর ও খুলনা নির্বাচনে তারা সেটা প্রমাণ করেছে।

তিনি আভিযোগ করে বলেন, সারাদেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সিটি নির্বাচনের সময় এনে জড়ো করা হয় সরকারি দলের প্রার্থীকে সর্মথন দেয়ার জন্য, যাতে বিরোধী দলের প্রার্থীরা মাঠে ময়দানে থাকতে না পারেন। তাই আমরা এ নির্বাচন কমিশনের আধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।

তিনি বলেন, তারপরেও আনেকে আমাদের বলে থাকেন কেন আমরা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি- প্রথমত আমরা গনতন্ত্রে বিশ্বাস করি, দ্বিতীয়ত আমরা অংশগ্রহণ করছি এটা বারবার প্রমাণ করার জন্য যে, এ নির্বাচন কমিশন একটি ব্যর্থ কমিশন; তবে এ তিনটি নির্বাচন হবে শেষ নির্বাচন, ফলে এ তিনটি নির্বাচন কী ধরনের হয় তার উপরে নির্ভর করেবে আগামী সংসদ নির্বাচনের চরিত্র।

তিনি জানান, এই আড়াই মাসের মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি জাতীয় পর্যায়ে একটি ঐক্যমতে আসার জন্য। সরকারের বাইরে যারা আছেন সকল দল, শক্তি, শ্রেণি, পেশাজীবী সকলকে নিয়ে একটি ঐক্য গঠন করা। কারণ আমরা মনে করি, একটি ফ্যাসিবাদী সরকারকে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে উৎখাত করা সম্ভব হবে না। ফলে একমাত্র পথ হল জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করে মাঠে নামা। আমরা মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, কোটা সংস্কারে হাইকোর্টের রায়ে কোন বাধা নয়। এই রায়ে কী আছে প্রধানমন্ত্রী নিজেও মনে হয় তা জানেন না; হয়তো শুনেছেন। তারপরেও যদি এ ধরনের কোন রায় আদালত দিয়ে থাকে তবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে তার আইনজীবীদের উচিৎ ছিল হাইকোর্টে গিয়ে রায়ের সংশোধন করে নেয়া, যাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রক্ষা করতে পারেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো: সেলিম ভূঁইয়াসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মো: আজম খান।