যে ৭টি বই ফুটবলপ্রেমীদের পড়া উচিত

যে ৭টি বই ফুটবলপ্রেমীদের পড়া উচিত

বিশ্বজুড়ে ফুটবলের জোয়ার বয়ে চলেছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা বলে কথা। খেলার জনপ্রিয়তার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমর্থক রয়েছে ফুটবলেরই। তবে আপনি যদি ফুটবল ভালোবাসেন এবং সাথে বইয়ের পোকা হয়ে থাকেন তাহলে এই লেখা আপনার জন্যে। ফুটবল এখন আর শুধু ময়দানে সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্যে ফুটবলের আগমন ঘটেছে আরো আগেই। ফুটবলের বিভিন্ন কলাকৌশল, কোচ ফুটবলারদের জীবনী ইত্যাদি নিয়ে বই আছে অসংখ্য। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটা বই নিয়ে কথা হোক আজকে।

দ্য মিক্সার (মাইকেল কক্স)

এই বইয়ের পাতাগুলো ছবি অথবা পরিসংখ্যানে ঠাসা নয়। প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে কথা উঠলেই সবাই বলে তাদের ব্যবসায়ী নীতির কথা। অবশ্যই এর অর্থনৈতিক দিক রয়েছে। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল খেলার গোটা জগতে যে একটা পরিবর্তন এনেছে বা প্রভাব ফেলেছে তা নিয়েই ‘দ্য মিক্সার’। প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং কোচ এবং কিছু স্মরণীয় মুহুর্তের সংকলন ‘দ্য মিক্সার’।

নো হাঙ্গার ইন প্যারাডাইজ (মাইকেল ক্যালভিন)

বল পায়ে মেসি, রোনালদো অবিরত ছুটে চলেন। গোল করে দলকে জেতান। সবাই খুশি। কিন্তু ফুটবলার হওয়ার যাত্রাটা কি তাদের এতই সুন্দর ছিল? আমরা শুধু তাদের জয়যাত্রা দেখি। কিন্তু এই অবস্থানে পৌছানোর জন্য তাদের যে পরিশ্রম সে বিষয়ে কদাচিৎই খবর রাখা হয় আমাদের। মাইকেল ক্যালভিনের বই সাজানো হয়েছে কিশোর ফুটবলারদের জীবন দিয়েই। যারা সবাই স্বপ্ন দেখে বড় খেলোয়াড় হওয়ার কিন্তু কারো স্বপ্ন পূরণ হয়, কারোটা রয়ে যায় স্বপ্নই। খেলোয়াড়দের ওপর কোচের, ক্লাবের এমনকি পরিবারের বিরূপ প্রভাব বোঝার জন্য এই বই আদর্শ।

ডিফারেন্ট ক্লাস – দ্য স্টোরি অফ লরি কানিংহাম (ডারমট কাভানা)

লরি কানিংহাম ছিলেন ব্রিটিশ ফুটবলার। মাত্র ৩৩ বছরে দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে যাওয়া লরি কানিংহাম রিয়াল মাদ্রিদে খেলা প্রথম ইংলিশ ফুটবলার। প্রতিনিয়ত বর্ণবাদের শিকার হওয়া সত্ত্বেও তার সামর্থ্যের কারণে বার্সেলোনা তাকে স্ট্যান্ডিং অভেশন জানাতে বাধ্য হয়েছিল। কানিংহাম শুধু একজন ফুটবলারই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এর থেকে বেশি কিছু। তিনি ছিলেন কালোদের জন্য একজন আইকন, পথ প্রদর্শক। তেমনি তার জীবনও ছিল আইকনি। সেই জীবনী নিয়ে ডারমট কাভানা রচনা করেন ডিফারেন্ট ক্লাস।

ব্রেইভ নিউ ওয়ার্ল্ড (গুইলেম বালাগ)

তিনি প্রিমিয়ার লিগের সেরা কোচদের মধ্যে একজন, হয়ত ইউরোপেরই, কিন্তু সবসময় থাকেন আড়ালে। তাইতো গার্দিওলা, মৌরিনহোর নামের ছায়ায়ই ঢাকা থাকেন আর্জেন্টাইন এই কোচ। মরিশিও পচেতিনহো প্রিমিয়ার লিগের টটেনহাম স্পার্সের কোচ। সবাই হয়ত টটেনহাম চিনেন, হ্যারি কেইনকে চিনেন। কিন্তু টটেনহামকে বদলে দেয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান যেই ব্যাক্তির তাকে চিনেন না। গুইলেম বালাগের সুযোগ হয়েছিল ভেতর থেকে টটেনহামের পরিবর্তনকে দেখা, পচেতিনহোকে দেখার। তার সফলতার গল্প নিয়ে রচিত ব্রেইভ নিউ ওয়ার্ল্ড।

দ্য ফল অফ দ্য হাউজ অফ ফিফা (ডেভিড কন)

সমস্ত খেলার মধ্যে সবচেয়ে সংগঠিত এবং বৃহৎ গভার্নিং বডি। কিন্তু ফিফার দুর্নীতির খাতাও কম বড় নয়। খেলাধুলার জগতে ডেভিড কন একজন খ্যাতিমান অনুসন্ধানী ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবেই পরিচিত। তিনি ফিফার দুর্নীতির খাতা সকলের সামনে তুলে ধরেন এই বইয়ে। তাছাড়া এই বইয়ে তিনি সবচেয়ে সমালোচিত ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারের একটা সুদীর্ঘ সাক্ষাৎকারও উপস্থাপন করেছেন। ফুটবল যারা ভালোবাসেন, ফুটবলের কালো অধ্যায়ে জানতে চাইলে এই বই আপনার সবার আগে দরকার।

ফ্রম দিল্লী টু ডেন (স্টেফেন কনসন্ট্যানটাইন এবং ওয়েন আমোস)

ইংলিশ ফুটবল কোল স্টেফেন কনসন্ট্যানটাইন এর কোচিং ক্যারিয়ার হয়ত সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক এবং একই সাথে বৈচিত্র্য। তার কোচিং ক্যারিয়ারে তিনি নেপাল, ইন্ডিয়া, সুদান, রুয়ান্ডার কোচ ছিলেন। ফুটবলকে খ্যাতি, জশের বাইরে থেকে জানতে চাইলে এই বই আপনার জন্য। ৫৫ বছর বয়সী ভারত ফুটবল দলের এই কোচ অবশ্য নিজের জীবনকে বর্ণাঢ্যই মনে করে। বর্নাঢ্যই বটে, কয়জন কোচের ভাগ্যে জলহস্তীর তাড়া খাওয়া জুটেছে!

ফুটবল-ব্লাডি হেল! (প্যাট্রিক বারক্লে)

কোচিং ক্যারিয়ার ৩৩ বছর বয়সে শুরু করলেও তার জীবনে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসে ১৯৮৬ সালে। তখন কেউ ভেবেছিল ৪৫ বছর বয়সী এই কোচই একসময় সর্বকালের সেরা কোচ হিসেবে মাঠ ছাড়বে? হ্যাঁ স্যার এলেক্স ফার্গুসনের কথাই বলছি। তিনি তার কোচিং জীবনে এতকিছু অর্জন করেছেন যা হয়ত অন্যান্য মানুষ বড়জোর কল্পনা করতে পারবে। এলেক্স ফার্গুসনের বর্ণাঢ্য জীবনের গল্প নিয়ে প্যাট্রুক বারক্লে রচনা করেছেন ফুটবল-ব্লাডি হেল!