কোটা আন্দোলনের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁনসহ তিনজনকে গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্য দুজন হলেন- মাহফুজ খান ও সুমন কবীর। তারা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।
রোববার দুপুরে মিরপুর ১৪ নম্বরের ভাষানটেক বাজার এলাকার মজুমদার রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুপুর ১২টার পর মিরপুরে রাশেদের বাসা থেকে তাদের তিনজনকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি পুলিশ।
কোটা আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন রোববার দুপুর সাড়ে বারোটায় তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে আসেন। তিনি লাইভে বিধ্বস্ত অবস্থায় বলছিলেন, আপনারা আমাকে বাঁচান ডিবি আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করুন। তিনি এ সশয় তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদেরকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
ফেসবুক লাইভ চলাকালে দরজা ধাক্কাধাক্কির শব্দ পাওয়া যায় এবং সেসময় রাশেদ আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। রাশেদ জানান, তাদের তিন জনকে ধাওয়া করেছে ডিবি পুলিশ।
পরে বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপপুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিককে জানান, রাশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইসিটি আইনের মামলায় রাশেদ খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ দুপুরে মিরপুর ১৪-এর ভাষানটেক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাশেদের বন্ধু দীন ইয়ামিন বলেন, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি, রাশেদ ও মাহফুজ ভাষানটেকের মজুমদার মোড়ে রাশেদের আত্মীয়ের বাসার সামনে ছিলেন। এ সময় পুলিশের পোশাক পরে ও সাদাপোশাকে কয়েকজন তাঁদের সামনে আসেন এবং তাঁদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে ওই এলাকার কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাও ছিলেন। একপর্যায়ে তাঁদের গতিবিধি সন্দেহ হলে রাশেদ পাশের বাসার ছাদে আশ্রয় নেন। এ সময় সেখান থেকে তাঁকে খুঁজে বের করে আটক করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই রাশেদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
দীন ইয়ামিন বলেন, রাশেদের সঙ্গে থাকা মাহফুজ খানকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাশেদের বড় বোন রূপালী বেগমও রাশেদের আটক হওয়ার খবর জানিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ভাইকে ফেরত চাই।’
এ বিষয়ে ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম বিষয়টি আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করছে, কিন্তু আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের থানার কেউ রাশেদকে আটক করেনি।’