পহেলা জুলাই, ১৯৩০। আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে স্বাগতিক উরুগুয়ের প্রথম বিশ্বকাপ জয়।
পহেলা জুলাই, ২০১৮, রোনালদোর পর্তুগালকে হারিয়ে বিশ্বকাপের শেষ আটে দ্য স্কাই ব্লুজ।
এডিনসন কাভানি রোনালদোর কাঁধে ভর দিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়েন। তার আগে পর্তুগালের বিশ্বকাপ স্বপ্ন পঙ্গু করেন তিনিই। ১৯৩০ এর পর বিশ্বকাপে প্রথমবার টানা চার ম্যাচ জিতলো উরুগুয়ে। সোচির ফিস্ট স্টেডিয়াম তাই হয়ে রইলো ইতিহাসের সাক্ষীও।
এই মাঠেই এবার হ্যাট্রিকে শুরু রোনালদোর বিশ্বকাপ। দুই ম্যাচেই চার গোল করে বিশ্বকে যেন বার্তা দিয়ে ছিলেন, এবার থাকছি বলে। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিষ্প্রভ থেকে রোনালদো বুঝতে পেরেছেন, একা একা আর যাই হোক বিশ্বজয় সম্ভব নয়। কাল রোনালদো একা ছিলেন না। পাঁচ মিনিটেই জোরালো শটে মুসলেরার পরীক্ষা নেয়া রনের সঙ্গে ভক্তরা ছিল। পর্তুগালের বাকীরাও যথেষ্ট খেলেছে কাল। রোনালদো পারেননি সহজাত খেলতে। ফার্স্টহাফে মাত্র দুটো শট, ডি বক্সে বলে একটিও টাচ নেই, এমন দিনে যা হবার তাই হল।
গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে ছন্দময় ফুটবল খেলেছে উরুগুয়ে। গোল পেয়েছেন সুয়ারেজ কাভানি দুজনই। দুর্দান্ত প্রেসিং ফুটবল খেলা উরুগুয়ে সাফল্য পায় প্রথম আক্রমণেই। সপ্তম মিনিটে তোরেইরার পাস খুঁজে নেয় কাভানিকে। ডানপ্রান্তে থাকা কাভানি ক্রস করেন বাঁপ্রান্তের সুয়ারেজ। নিজের নিয়ন্ত্রণে বল নিয়ে ফের ক্রস। ততক্ষণে কাভানি প্যাট্রিসিওর সামনে। যে আক্রমণের সূচনা করেছেন তিনি, চমৎকার হেডারে দৃষ্টিনন্দন গোল করে সমাপ্তিও টানেন তিনিই। গোলের পর আরে মরিয়া হয়ে উঠে উরুগুয়ে। একদিকে সুয়ারেজ-কাভানি পর্তুগিজ রক্ষণে, অন্যদিকে নিজ অর্ধে দেয়াল তুলে গোডিন, গিমেনেজরা প্রথমার্ধে টুঁটিই চেপে ধরেছিল পর্তুগালের।
বিরতির পর ফিরে একটু একটু করে খেলায় ফিরতে শুরু করে পর্তুগাল। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আক্রমণে মনোযোগী হয় তারা। তারই ফল ৫৫ মিনিটে পেপের গোল। কর্ণার থেকে বল পেয়ে ক্রস করেন গুরেরো, সুযোগ কাজে লাগান পর্তুগিজ ডিফেন্ডার। গোল দিয়ে হিরো বনে যাওয়া পেপে মিনিট সাতেক পর হয়ে যান খলনায়ক। বল ক্লিয়ার করতে ব্যাক হেড দেন। বল পেয়ে যায় উরুগুয়ের বেনটাঞ্চার। পাস দিলেন কাভানিকে। তাতে সুদর্শন এক বাঁকানো শটে গোল করে এগিয়ে নেন দেশকে, পূর্ণ হয় ম্যাচে জোড়া গোল।
ফার্নান্দো সান্তোস আর পর্তুগাল তখনো হাল ছাড়েনি। রিকার্ডে কারেজমা, আন্দ্রে সিলভাদের নামিয়ে শক্তি বাড়িয়ে আক্রমণে যায় পর্তুগাল। কিন্তু, আলোর মুখ আর দেখেনি সেসব। ম্যাচের একেবারে অন্তিম লগ্নে কর্ণার পায় সেলেসাওরা, রুই প্যাট্রিসিও’ও চলে এসে হেড দেন। না, তবুও হয় না। ২০১০ বিশ্বকাপের পর আবার শেষ ষোলোতেই বিদায় নেয় পর্তুগাল।
ম্যাচসেরা : এডিনসন কাভানি (উরুগুয়ে)