গোল বলের গোলকিপার বলে অবহেলা নয়

গোল বলের গোলকিপার বলে অবহেলা নয়

গোলকিপার। প্রথম ঝলকে তেকাঠির নিচে নির্দিষ্ট সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা গোলকিপারকে ফুটবল মাঠের সবচেয়ে অলস হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন অনেকেই। ভাবতে পারেন গুরুত্বহীন চরিত্ররূপে। একজন মাঝ মাঠের বা আক্রমণভাগের ফুটবলার গোল করে লিড এনে দিলেও প্রতিপক্ষের দূর্দান্ত আক্রমণ রুখে দিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্বটা গোলকিপারের। তার একটি ভুলে যেমন ডুবতে পারে দল, তেমনি তার একটি ভাল সেভ পারে দলের জয় নিশ্চিত করে দিতে।

পারফরমেন্স, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গোলকিপারের বাহুতে শোভা পায় অধিনায়কের আর্মব্যান্ড। মাঠে অধিনায়ককে প্রতি মুহুর্তে সজাগ থাকতে হয়, দলের ফুটবলারদের দিতে হয় সঠিক দিক নির্দেশনা, চাপের মুখে উৎসাহ দিয়ে চাঙ্গা করতে হয় দলকে। ফুটবলে অধিনায়কের সবচেয়ে বড় কাজ সম্ভবত রেফারিকে হ্যান্ডেল করা। রেফারির নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা, তাকে বোঝানো, প্লেয়ারদের কার্ডের হাত থেকে বাঁচাতে রেফারির সঙ্গে কথা বলা; এসব বেশ গুরুত্ব বহন করে ম্যাচে। মাঠের এক প্রান্তে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে একজন গোলকিপার অধিনায়ক হিসেবে কি তার সব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন? একজন গোলকিপার কি সফল অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেন?

অনেকে নিজেদের প্রমাণ করেছেন বেশ ভালোভাবেই। এবারের বিশ্বকাপেও স্বাগতিক রাশিয়া, গতবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, ‘৯৮ এর বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্সসহ আফ্রিকান প্রতিনিধি মিশর বিশ্বাস রেখে অধিনায়কত্ব সঁপেছে গোলকিপারকে। ৩২ বছর বয়সী রাশান গোলকিপার ইগোর আকিনফিভ গ্রুপ পর্বে ৩ ম্যাচে ২ জয়, ১ পরাজয় দিয়ে দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে নিয়ে গেছেন। ১৯৯০ সালে রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিভক্ত হওয়ার পর রাশিয়ান ফুটবলে এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। জার্মান কিপার ম্যানুয়াল নয়্যারে আস্থা রাখলেও যথাযথ প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। ৩ ম্যাচের দু’টিতে হেরে গ্রপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ইউরোপ জায়ান্টদের। ইউরোপের আরেক পরাশক্তি ফ্রান্সের দায়িত্ব ৩১ বছর বয়সী হুগো লরিসের হাতে। টটোনহাম অধিনায়ক বিশ্বকাপে বেশ ভালোমতোন দায়িত্ব পালন করছেন। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছে ফ্রান্স। মিশরের নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী ইসাম আল হাদারি। তবে বহু বছর পর বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া ফারাওরা বাদ যায় গ্রুপপর্বে।

এখন পর্যন্ত এই বিশ্বকাপে জার্মানি ও মিশর ব্যর্থ হলেও ফ্রান্স, রাশিয়া আছে কক্ষপথে। দুই দলের সমর্থকরা তাদের অধিনায়কের ওপর বিশ্বকাপ এনে দেয়ার আস্থা রাখতেই পারেন। অনুপ্রেরণা হিসেবে ২০১০ এর স্পেন কিপার ইকার ক্যাসিয়াস তো আছেনই।