প্রখ্যাত ইসলামি গবেষক এবং সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার সাবেক মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল মালিক ‘মুসলমানদের যা অবশ্যই জানতে হবে’ মর্মে একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যকীয় এমন ৭৭টি বিষয় তুলে ধরেছেন।
বইটির গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে আরেক প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইসহাক আলমাদানী লিখেছেন, “ঐতিহ্যবাহী সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসার সাবেক মুহাদ্দিস, আমার শ্রদ্ধাভাজন উস্তাদ, প্রখ্যাত আ’লেমে দ্বীন, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও মুফাসসিরে কুরআন, আল্লামা শায়খ আব্দুল মালিক চৌধুরী আলোচ্য বইয়ে ঈমানের শাখা প্রশাখা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসের দলীল সহকারে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। ঈমানের তাৎপর্য ও এর শাখা প্রশাখার উপর বাংলা ভাষায় এ রকম মৌলিক বইয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। সুতরাং বিস্তারিত দলিল-প্রমাণ সম্বলিত এবং জ্ঞানগর্ভ আলোচনা সমৃদ্ধ উক্ত বইটি প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর পাঠ করা জরুরি বলে আমি মনে করি।”
জবানের পাঠকদের জন্য গ্রন্থে বর্ণিত ৭৭টি বিষয় এক নজরে তুলে ধরা হল–
১. আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়া’লার উপরে ঈমান আনা।
২. ফেরেশতাদের ব্যাপারে ঈমান আনা।
৩. আল্লাহ পাকের সমস্ত কিতাবের উপরে ঈমান আনা।
৪. নবী-রাসুলগণের উপর ঈমান আনা।
৫. তাক্বদীরে ঈমান রাখা।
৬. পরকালে বিশ্বাস থাকা।
৭. দয়াময় আল্লাহ তায়ালার সাথে সর্বাধিক মহব্বত রাখা।
৮. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে সকল মানুষের চাইতে বেশি মহব্বত রাখা।
৯. মানুষের সাথে ভালোবাসা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে হওয়া।
১০. দানশীল মানসিকতা থাকা।
১১. ভালো কাজ করতে পারলে খুশি এবং মন্দ কাজ করলে অনুতপ্ত হওয়া।
১২. ধার্মিক লোকদের সাথে সম্পর্ক রাখা।
১৩. এখলাস তথা সকল ভালো কাজ বা আমল একমাত্র আল্লাহ তায়া’লাকে খুশি করার উদ্যেশ্যে সম্পন্ন করা।
১৪. নিয়মিত তাওবা বা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া।
১৫. মনের মধ্যে সর্বদা আল্লাহ তায়া’লার ভয় থাকা।
১৬. সর্বদা দয়াময় আল্লাহ পাকের রহমতের আশা করা।
১৭. গোনাহর কাজ করে ফেললে লজ্জাবোধ করা।
১৮. নিয়ামত লাভের পরে শুকরিয়া আদায় করা।
১৯. কষ্ট পেলে সবর বা ধৈর্য ধারণ করা।
২০. জায়েজ ও ভাল কাজের ওয়াদা পূর্ণ করা।
২১. বিনয় অর্জন করা।
২২. ত্বাকদ্বীরের উপর সন্তুষ্ট থাকা।
২৩. জীবের প্রতি দয়া করা।
২৪. আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা রাখা।
২৫. নিজেকে বড় মনে না করা।
২৬. কারো সাথে মনোমালিন্য করা থেকে বিরত থাকা।
২৭. হিংসা বিদ্বেষ বর্জন করা।
২৮. রাগ দমন করা।
২৯. কারো অমঙ্গল কামনা না করা।
৩০. দুনিয়ার মহব্বত ত্যাগ করা।
৩১. কালিমায়ে শাহাদাৎ পড়া।
৩২. কুরআন তেলাওয়াত করা।
৩৩. ইসলামি জ্ঞান শিক্ষা নেয়া।
৩৪. ইসলামি জ্ঞান শিক্ষা দেয়া।
৩৫. দুয়া করা।
৩৬. আল্লাহ তায়ালার জিকির করা।
৩৭. অপ্রয়োজনীয় চিন্তা ও কথা থেকে মন ও জিহ্বাকে হেফাজত করা।
৩৮. পাকপবিত্র থাকা।
৩৯. সালাত বা নামাজ প্রতিষ্ঠা করা।
৪০. যাকাত ও উশর আদায় করা।
৪১. সিয়াম বা রোজা রাখা।
৪২. হজ্জ ও উমরা আদায় করা।
৪৩. এ’তেকাফ করা শবে ক্বদর তালাশ করা।
৪৪. ইমান ও দ্বীন রক্ষার্থে হিজরত করা।
৪৫. হালাল নযর ও মান্নত পূর্ণ করা।
৪৬. বৈধ কসম পূর্ন করা।
৪৭. কসম ভঙ্গ করলে কাফফারা আদায় করা।
৪৮. সতর বা নির্দিষ্ট স্থান ঢেকে রাখা।
৪৯. কুরবানি করা।
৫০. মৃত ব্যক্তির দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা।
৫১. ঋণ পরিশোধ করা।
৫২. ব্যবসা বাণিজ্যে সততা বজায় রাখা।
৫৩. সত্য সাক্ষ্য গোপন না করা।
৫৪. বিবাহের মাধ্যমে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা।
৫৫. স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের হক আদায় করা।
৫৬. মাতা-পিতার হক আদায় করা।
৫৭. সন্তান লালন পালন করা।
৫৮. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৫৯. বড়কে সম্মান করা ও ছোটকে স্নেহ করা।
৬০. মেহমানকে সম্মান করা।
৬১. ন্যায় বিচার করা।
৬২. ইসলামের সাথে সংঘবদ্ধ থাকা।
৬৩. ইমামের আনুগত্য করা।
৬৪. লোকদের মধ্যকার ঝগড়া বিবাদ মিটিয়ে দেয়া।
৬৫. সৎ কাজে সহায়তা করা ও অসৎ কাজে সহায়তা না করা।
৬৬. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা।
৬৭. হদ ক্বায়েম করা।
৬৮. ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা করা।
৬৯. অভাবগ্রস্তকে ধার দেয়া।
৭০. প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
৭১. নিজের জন্য যা পছন্দ অন্যের জন্যও তা পছন্দ করা।
৭২. অর্থের সদ্ব্যবহার করা।
৭৩. আমানতের খেয়ানত না করা।
৭৪. এক মুসলমান অন্য মুসলমানের হক আদায় করবে।
৭৫. অন্যের ক্ষতি না করা, কাউকে কষ্ট না দেয়া।
৭৬. নাচ-গান, বাদ্য ও তামাশা থেকে দূরে থাকা।
৭৭. রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এসকল বিষয়ের উপরে আমল করার তাওফিক দান করুক, আমিন।