গাজীপুর নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে শ্রমিক ভোটাররা

গাজীপুর নির্বাচনে ফ্যাক্টর হবে শ্রমিক ভোটাররা

গাজীপুরে ভোটারদের বড় একটি অংশ পোশাক শিল্প ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে কাজ করেন। গাজীপুরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন, এর মধ্যে অন্তত ২ লাখ শহরের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক বলে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জানান।

বাংলাদেশে প্রায় ৪ হাজার পোশাক কারখানার মধ্যে কেবল গাজীপুরেই রয়েছে দেড় হাজারের মতো পোশাক কারখানা। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে পাঁচশোর বেশি। এ ছাড়া টঙ্গী এবং কোনাবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) দুটি শিল্পনগরী রয়েছে। এর বাইরে পানীয়, জুতা, যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন ধরনের ভারি শিল্পকারখানা রয়েছে। ফলে নির্বাচনে পোশাক শ্রমিকদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক প্রার্থী। ঈদের পর শনিবার থেকে চালু হয়েছে পোশাক কারখানাগুলো। ফলে আগের চেয়ে অনেক জোরেশোরে বেড়েছে প্রচারণাও হয়েছে।

এ কারণে নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে শ্রমিকদের ভোট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন প্রার্থীরা। ঈদের ছুটি শেষে গাজীপুর শহরের বিভিন্ন কারখানা খুলেছে ২৩ ও ২৪ জুন শনি ও রবিবার। আর ২৪ জুন রাত ১২টায় শেষ হয়েছে প্রচারণা। তার আগেই শ্রমিকদের ফিরে আসা নিশ্চিত করতে তৎপর ছিলেন প্রার্থীরা। শ্রমিকদের বেশির ভাগের বাড়ি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন উপজেলায়। ২৬ জুন মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শ্রমিকদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের জন্য বাস ভাড়ার ব্যবস্থা করা, এমনকি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন উপজেলায় বাসও পাঠিয়েছেন প্রার্থীরা।

নির্বাচনে শ্রমিকদের ভোট পক্ষে টানতে নানা কৌশল ও প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন দুই প্রধান মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনী ইশতেহারে মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়ে শ্রমিকদের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান ও নানা কল্যাণমুখী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, এক সময় তিনি শ্রমিক রাজনীতি করতেন। শ্রমিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। তবে ভোটের জন্য কোনো প্রলোভন দেখাতে রাজি নন তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শ্রমিক ভোটকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তিনি। নির্বাচনের আগে তিনিও শ্রমিকদের ফেরত আনার চেষ্টা করেছেন। শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরাও যার যার মতো করে কাজ করেছেন।

গ্রামে যাওয়া শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে নিজের সাধ্যমতো সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন বলে জানান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মামুন মণ্ডল। তিনি বলেন, ঈদ করতে শ্রমিকেরা দেশের যে প্রান্তেই যাক না কেন তাদের ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে শ্রমিক ভোটাররাই প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। বড় দুই দলের প্রার্থী যথাসময়ে শ্রমিকরা নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের কাঙ্খিত প্রার্থীদের বিজয়ী করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।