রোনালদোর গোলে স্বস্তির জয় পর্তুগালের

রোনালদোর গোলে স্বস্তির জয় পর্তুগালের

রোনালদোর একমাত্র গোলে মরোক্কোকে হারিয়ে স্বস্তির জয় পেল পর্তুগাল। আর এ পরাজয়ে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেল মরোক্কানদের। ম্যাচের শুরুতেই আক্রমণাত্মক খেলায় চার মিনিটের মাথায় সফলতার দেখা পায় পর্তুগিজ শিবির। আবারও স্ক্রিনে আসে রোনালদো। দারুণ এক হেডে গোল করে এগিয়ে নেন দলকে।

পর্তুগাল ১  –  ০ মরোক্কো 
রোনালদো ৪’

লাইন আপ :

পর্তুগাল (৪-৪-২) 
প্যাট্রিসিও, সেডরিক, পেপে, ফন্ট, গুরেইরো, সিলভা, কারভালহো, মৌটিনহো, জোয়াও মারিও, গুয়েদেস, রোনালদো

সাব : সিলভা-গ্লেসন মার্টিন্স, জোয়াও মারিও-ব্রুনো ফার্নান্দেজ, মৌটিনহো-আদ্রিয়ান সিলভা

মরক্কো (৪-২-৩-১) 

মুনির, হাকিমি, ম্যানুয়েল দ্য কস্তা, বেনাটিয়া, নাবিল, মবারক, এল আহমাদি, জিয়েখ, বেলহান্দা, আমারবাত, বৌতাইব

সাব : বৌতাইব-আয়ুব কবি, বেলহান্দা-কারসেলা, এল আহমাদি-ফজর

প্রথমার্ধ 

প্রথমার্ধের শুরুটাই স্বপ্নের মত হয়েছিল পর্তুগিজ সমর্থকদের জন্য। ম্যাচের মাত্র চার মিনিটের মাথায়ই মাথার দারুণ ব্যবহার করে চলতি বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ এবং ম্যাচের প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে নেন পুর্তগিজ যুবরাজ রোনালদো। তবে তার ঠিক আগ মুহুর্তেই প্রথম আক্রমণ করে পর্তুগাল যেন প্রচ্ছন্ন একটি হুমকিই দিয়ে রেখেছিল মরোক্কানরা। রোনালদোর গোলে সেটি ব্যুমেরাং হয়ে গেলেও প্রথমার্ধে সামান্যও না দমে বরং দারুণ খেলেছে মরক্কো। প্রেসিং, পাসিং সব কিছুতেই পর্তুগালের চেয়ে বেহতার অবস্থায় থাকলেও গোল করতে পারার ব্যর্থতাতেই প্রথমার্ধটা হতাশা নিয়ে শেষ করেছে মরোক্কানরা। তবে প্রথমার্ধে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করেছেন রেফারি। দু’দল মিলিয়ে ফাউল করেছে ১৯ টা! এমন শরীর নির্ভর ফুটবল বিশ্বকাপের মতন আসরের আনন্দ কিছুটা হলেও মাটি করে দেয়। ম্যাচের প্রথমার্ধে আরো একটি পরিষ্কার গোলের সুযোগ পেয়েছিল পর্তুগাল। ম্যাচের ৪০ মিনিটের মাথায় রোনালদোর বাড়ানো অসাধারণ বলটি নিদারুণ ব্যার্থতায় নষ্ট করেছেন গুয়েদেস। এটিতে গোলরক্ষক মুনিরের কৃতিত্বও কম না। তবে ত নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে রোনালদো যে খুশি মনেই প্রথমার্ধ শেষ করেছেন তা হলফ করেই বলা যায়। প্রথমার্ধে দেয়া একমাত্র গোলটিতেই ফেরেঙ্ক পুসকাসকে টপকে ইউরোপের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে যে বসে গিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধ 

ফুটবল কখনো কখনো খুব নিষ্ঠুর। কখনো কখনো স্কোর সত্য বলে না। ০-১ স্কোরকার্ডটি মরোক্কানদের কাছে ম্যাচ শেষে একটি নিষ্ঠুর প্রহসন বলেই মনে হবে। রোনালদো আটকানো থেকে শুরু করে মুহুর্মুহু আক্রমণ; কি করেনি এ আর্ধে মরোক্কো? হ্যাঁ, শুধু মূল কাজ গোলটিই করতে পারেনি, আর তাতেই টানা দু ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে গেল তাদের। গোল না খাওয়ার জন্য যতটা কৃতিত্ব তার চেয়ে কোনো অংশে কম না ভাগ্য এবং রেফারিরও। হ্যাঁ, প্যাট্রিসিও বেশ ক’টি ভালো সেভ করেছেন বটে, কিন্তু মরোক্কোকে তার চেয়ে বেশি ভুগিয়েছে ফিনিশিংয়ে ব্যর্থতা এবং রেফারির অন্ধ দৃষ্টি। বেশ ক‘টি পেনাল্টি নিশ্চিতভাবেই পেতে পারত মরোক্কানরা। শ্যুট, পজিশন সবকিছুতেই পর্তুগালের চেয়ে এগিয়ে থেকেও হতাশা নিয়েই ম্যাচ শেষ করতে হয়েছে মরোক্কোকে। রেফারিং কতটা জঘন্য হয়েছে তা হয়তো মরোক্কান কোচ তার বিবৃতিতেই বলবেন। তবে খেলা যে কতটা দৃষ্টিকটূ ছিল সেটি বোঝার জন্য একটি তথ্যই যথেষ্ট, পর্তুগাল এবং মরোক্কো দু’দল ফাউল করেছে ১৮টি এবং ১৯টি করে। এ জয়ে হাফ ছেড়ে বেচেছে বটে পর্তুগাল, তবে ম্যাচটি শেষ করেছে স্বস্তির চেয়ে বেশি অস্বস্তি নিয়েই। এমন খেললে বিশ্বকাপ স্বপ্নের সমাধি হতে খুব বেশি ম্যাচ লাগবে না।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ : ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো (পর্তুগাল)