প্রবীণ কাশ্মিরী সম্পাদক সুজাত বুখারি হত্যার কারণে ঈদের আগেই কাশ্মিরে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। ঈদের পর এসে সে উত্তেজনায় এক রকম ঘি ঢাললো বিজেপি। আজ মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপি মন্ত্রীদের বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে, কাশ্মিরী সরকারকে সমর্থন নিয়ে। তারা আর মুফতি সরকারকে সমর্থন করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অর্থাৎ জম্মু ও কাশ্মিরে ক্ষমতাসীন পিডিপি’র (পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি) ওপর থেকে বিজেপির সমর্থন তুলে নেয়া হয়েছে। এতে করে নতুন সংকটে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সরকার। যে কোন সময় ক্ষমতাচ্যূত হতে পারেন তিনি, সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির।
ইতোমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মেহবুবা মুফতি। জোট থেকে বিজেপির সরে দাঁড়ানোয় ৮৭টি আসনের মধ্যে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি’র হাতে থাকছে ২৮টি আসন। পদত্যাগের পর নতুন কোন জোট গঠনের চিন্তাও নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন দলটির প্রধান মেহবুবা মুফতি।
নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে বিজেপি’র মুখপাত্র বিজেপি নেতা রাম মাধব বলেন, সাম্প্রতিক যে ঘটনাপ্রবাহ কাশ্মিরে চলছে, তাতে বিজেপি’র পক্ষে পিডিপি সরকারকে সমর্থন জোগানো সম্ভব নয়।
বর্তমানে মেহবুবা মুফতি ‘অস্ত্র বিরতি’ বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান করছেন। যা মোদি সরকারের জন্য সুখকর নয়। বিজেপির অভিযোগ কাশ্মিরে জঙ্গি কার্যকলাপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুফতির শাসনকালে কাশ্মিরের মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে দাবি করছে দলটি। বিজেপি উপত্যকায় শান্তি এবং উন্নয়নের নতুন কৌশলও অবলম্বন করেছে ইতোমধ্যে। পিডিপিকে তিন বছর ধরে সমর্থন দিলেও নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে দ্বিমত তৈরি হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত তারই বহিপ্রকাশ।
বিজেপি’র পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যেই রাজ্যপালের কাছে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা জানানো হয়েছে। ফলে, কাশ্মিরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে কাশ্মিরে সেনা অভিযান চালানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আর জবাবদিহি করতে হবে না। কাশ্মির পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে পারলে বিরোধীদের মুখও বন্ধ করা যাবে। অন্যদিকে, আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে অমরনাথ যাত্রা নিরাপদে শেষ করাটাও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। যার জন্য সেনা অভিযান অবিলম্বে শুরু করাটা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। মোটকথা রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশ করেই কাশ্মির দমনের নতুন এই চাল চেলেছেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ।