স্পেন ৩ – ৩ পর্তুগাল
কস্তা ২৪, ৫৫ রোনালদো ৪, ৪৪, ৮৮
নাচো ৫৮
পর্তুগাল : (৪-২-৩-১)
রুই প্যাট্রিসিও, চেদরিক, পেপে, ফন্তে, রাফায়েল, উইলিয়াম কার্বাহাল, মৌতিনহো, বের্নাডো সিলভা, গুয়েরেস, ব্রুনো ফের্নান্দেস, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
সাব : ব্রুনো ফের্নান্দেস- জোয়াও মারিও, বের্নাডো সিলভা- কারেজমা, গুয়েদেস- আন্দ্রে সিলভা
স্পেন : (৪-২-৩-১)
ডি হেয়া, নাচো ফার্নান্দেজ, রামোস, পিকে, জর্দি আলবা, সার্জিও বুস্কেটস, কোকে, ডেভিড সিলভা, ইস্কো, ইনিয়েস্তা, ডিয়াগো কস্তা
সাব: ইনিয়েস্তা- থিয়াগো আলকান্তারা, ডিয়াগো কস্তা- লেগো আসপাস, ডেভিড সিলভা- লুকাস ভাসকুয়েজ
প্রথমার্ধ্ব
ঈদের প্রথম প্রহরে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে স্পেন-পর্তুগাল হাইভোল্টেজ ম্যাচ। চতুর্থ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর গোলে তার ভক্তরা একপ্রস্থ ঈদ উল্লাস সেরে নিয়েছে। ম্যাচঘড়িতে তখন মাত্র চার মিনিট। স্প্যানিশ ডি বক্সে রোনালদোর ট্যাপ ইনে বিভ্রান্ত ডিফেন্ডার নাচো ফাউল করে বসলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ইতালিয়ান রেফারি গিয়ানলুকা রচ্চি। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি সিআরসেভেন। টানা চার বিশ্বকাপে গোল দেবার অনন্য কীর্তি গড়লেন তিনি। গোল খেয়ে খেলায় ফেরে স্পেন। একটু একটু করে নিজেদের ঘুচিয়ে নেয় লা রোজারা। ১৬ মিনিটে ইনিয়েস্তার দারুণ সুযোগ রুখে উল্টো কাউন্টার অ্যাটাকে যায় পর্তুগাল। কিন্তু মিডফিল্ড সেনা গুয়েদেসের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ২১ মিনিটে আবারো স্পেনের আক্রমণ, কাউন্টারে পর্তুগাল। ২৪ মিনিটে ২০১০ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে স্পেন-হল্যান্ড ম্যাচ মনে করালেন ডিয়াগো কস্তা। সেবার স্প্যানিশ ডিফেন্সকে ঘোল খাইয়ে একক প্রচেষ্টায় গোল করেছিলেন রবেন, এবার দুই পর্তুগিজ ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে চমৎকার গোলে সমতা ফেরান ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভুত স্প্যানিশ তারকা কস্তা। পরের মিনিটেই ইস্কোর দুর্দান্ত লং শট একটুর জন্য গোলে পরিণত হয়নি, ব্যহত হয় বারে লেগে। ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বের হতে থাকে স্পেন। ৩৫ মিনিটে তাদের দলীয় সমন্বয়ে গড়া আক্রমণে ইনিয়েস্তার শট বার ঘেঁষে যায়। পরের মিনিটে পর্তুগাল লেফট ব্যাক রাফায়েল কোরেইয়ার লং শট বারের উপর দিয়ে যায়। ৪২ মিনিটে ইস্কোর লং শট রুখে দেন রুই প্যাট্রিসিও। প্রথমার্ধ্বে ৬৩ শতাংশ বল দখল, ৮টি আক্রমণ আর ৫টি কর্ণার বলে দেয় স্পেনের প্রভাব বিস্তারের কথা। কিন্তু, প্রথমার্ধ্ব রোনালদোর। ৪৪ মিনিটে মাটি কামড়ানো শুটে বিশ্বকাপে প্রথমবার জোড়া গোলের দেখা পান তিনি। অবশ্য, তার দ্বিতীয় গোলে ডি হেয়ার দুর্বল সেইভও কম দায়ী নয়।
দ্বিতীয়ার্ধ্ব
বিরতির পর যেন আরো আগ্রাসী নতুন কোচ হিয়েরোর স্পেন। গোছানো ফুটবলে পর্তুগিজ ডিফেন্সকে তটস্থ করে রাখে তারা। ৫৪ মিনিটে ফ্রিকিক পায় দ্য ম্যাটাডোরস। সিলভার শটে মাথা ছোঁয়ান বুস্কেটস, বল পায় কস্তা। সেখান থেকে আরেকবার দলকে সমতায় ফেরাতে ভুল হয়নি তার। ৫৮ মিনিটে আনমার্কড নাচোর বুলেট শট পর্তুগিজ জালে জড়ালে ম্যাচে প্রথমবার এগিয়ে যায় ২০১০ এর চ্যাম্পিয়নরা। তারপর যতক্ষণ ম্যাচ গড়িয়েছে স্পেন আরো আগ্রাসী হতে থাকে। মাঝে কারেজমা, রোনালদোরা সুযোগ পেলেও সমতায় ফেরাতে পারেনি দলকে। ৮০ মিনিটে বিরক্ত ভঙ্গিতে থ্রো লাইনে দাঁড়ানো জর্দি আলবাকে বল দেয়ার দৃশ্যে স্পষ্ট হয় পর্তুগিজ অধিনায়ক রোনালদোর হতাশা। তবে রাতটি তারই। ৮৬ মিনিটে জেরার্ড পিকে তাকে ফেলে দিলে ফ্রিকিক পেয়ে যায় পর্তুগাল। মানব দেয়াল ভেদ করে বিচক্ষণ বুদ্ধিদীপ্ত স্লো শটে গোলরক্ষক ডেভিড ডি হেয়াকে বোকা বানান রোনালদো। বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পান সিআরসেভেন। প্রথম পেনাল্টির মতোন রাশিয়া আসরে প্রথম হ্যাটট্রিকও মাদেইরার মহারাজের। পরের পাঁচমিনিটে আর কোন গোল না হওয়ায় দুই ইউরোপিয়ান জায়ান্টের লড়াই থামে ৩-৩ গোলের অমীমাংসায়।
ম্যান অব দি ম্যাচ : ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো