রাশিয়া ৫ – ০ সৌদি আরব
গাজিনিস্কি ১২’
চেরিশেভ ৪৩’,৯০+১
জিয়োবা ৭১’
গলোভিন ৯০+৪’
বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা করেছে স্বাগতিক রাশিয়া। চেরিশেভের দুটি এবং গাজিনিস্কি, জিয়োবা ও গলোভিনের একবার করে লক্ষ্য ভেদে সৌদি আরব কে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে তারা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন রাশিয়ার গলোভিন
লাইন আপ :
রাশিয়া (৪-২-৩-১)
আকিনফেভ, মারিও ফার্নান্দেস, কুতেপভ, ইগনাশেভিচ, ঝিরকভ, গাজিনস্কি, জবনিন, সামেদভ, জাগোয়েভ, গলোভিন, স্নোলোভ
সাব : জাগোয়েভ-চেরিশেভ, সামেদভ-কুজিয়ায়েভ, সলোমভ-জিয়োবা
সৌদি আরব (৪-১-৪-১)
আল-শালাওয়ি, আল-দাওয়াসারি, আল-ফারাজ, আল-জাসিম, আল সেহরী, আবদুল্লাহ, ইয়াসির, হাওয়াসায়ি, ওসামা হাওয়াসায়ি, আল বুরায়িক, আল মুয়াইয়ুফ
সাব : আব্দুল্লাহ-ফাহাদ, আল সেহরী-সুলতান বাভির, আল সালাওয়ি-আসিরি
প্রথমার্ধ
দু দলের কারোর ইতিহাসই আশাজাগানিয়া ছিল না। বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ দশ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি সৌদিরা। অপর দিকে রাশিয়াও বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ পাঁচ ম্যাচ জয়শূণ্য। এমন অবস্থায় সৌদির পক্ষে শুধু একটি জিনিসই ছিল, সেটি হচ্ছে রাশিয়ার সাথে শেষবার মুখোমুখি হবার সুখস্মৃতি, যেটিতে আরাবিয়ানরা জিতেছিল ৪-২ গোলে। কিন্তু নিজেদের দর্শকদের সামনে ইতিহাসকে স্রেফ কাগুজে তথ্যে পরিণত করে শুরু থেকেই ঝাপিয়ে পরে রাশিয়া। দুর্দান্ত গতি, নিজেদের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়ায় বেশ কবারই হানা দিয়েছিল সৌদি রক্ষণে। কিন্তু কাজের কাজটা হচ্ছিল না। ঝিরকভের কর্ণার ব্লক হলেও তা থেকে রচিত আক্রমণেই প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় এবারের বিশ্বকাপ। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় গোলোভিনের ক্রসে মাথা ছুইয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপের প্রথম গোলটি করেন গাজিনস্কি। এরপরের অংশটা মেড়মেড়েই হয়েছে। সৌদিরা বলের দখল রাখলেও রাশিয়ার রক্ষণের সামনে গিয়ে বারবারই খেই হারিয়ে ফেলছিল। এ সুযোগে রাশিয়াও চেষ্টা করেছে বেশ কিছু প্রতি আক্রমণ চালানোর। কিন্তু তাতেও বিশেষ সুবিধে হচ্ছিল না। অনেকটা আচমকাই প্রথমার্ধের একদম শেষের দিকে আসে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি। এটিকে রাশিয়াকে সৌদি আরবের উপহারই বলা যায়। রক্ষণের আয়েসি ভঙ্গিমার পুরো সুযোগ নিয়ে জবনিনের বাড়ানো বল চেরিশেভ জালে জড়াতে সামান্য ভুলও করেননি। তার আগে সৌদি ডিফেন্ডাররা যেভাবে গড়াগড়ি খেয়েছে মাটিতে সেটি অবশ্য দেখার মত দৃশ্য ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধ
দ্বিতীয়ার্ধে খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশী ব্যাস্ত সময় পার করেছেন রেফারী এবং দুই লাইন্সম্যান। নিরুত্তাপ, নিস্তেজ ফুটবল বলতে যা বোঝায় তার চূড়ান্ত এক প্রদর্শনিই যেন দেখা গিয়েছে এ আর্ধে। এর মাঝে টুকটাক যেটুকু আক্রমণ হয়েছে তাও উল্লেখ করার মত কিছুই না, শুধু স্মোলোভ এর জায়গায় নেমেই জিয়ুবার গোলটি। গ্লোভিন এর আরো একটি চমৎকার ক্রসকে গোলে পরিণত করে রাশিয়ানদের উল্লাসে মাতিয়েছেন তিনি। এটুকু পড়েই যারা বাকিটুকু অনুমান করে নিয়েছেন তাদের দিকে চেয়ে বোধয় মুচকী হাঁসিই হেসেছেন চেরিশেভ এবং গোলোভিন। পুরো ম্যাচ দুর্দান্ত খেলা গোলোভিন শেষটা করেছেন ফ্রি-কিক থেকে চমৎকার এক গোলে। তার আগেই চোখ ধাধানো একটি গোল উপহার দিয়েছেন চেরিশেভ। সৌদি বা নিরপেক্ষ দর্শকদের জন্য ম্যাচটি যেমনই হোক রাশিয়ানদের জন্য বিশ্বকাপের শুরুটা এরচেয়ে ভালোভাবে হতে পারত না। ৯০-৯৪ এ চার মিনিট কেই বলা যায় এ আর্ধের প্রাণ। পুরো ম্যাচে সবচেয়ে আনন্দে বোধয় ছিলেন রাশিয়ান অধিনায়ক আকিনফেভ, পুরো ম্যাচে যে একবারও পরীক্ষা দিতে হয়নি তাকে।
ম্যান অফ দ্য ম্যাচ : আলেক্সজান্দার গোলোভিন (রাশিয়া)