এক মাস সংযমের পরে ঈদের দিনের খাওয়া-দাওয়া

এক মাস সংযমের পরে ঈদের দিনের খাওয়া-দাওয়া

দু’দিন পরেই ঈদ-উল-ফিতর। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর ধর্মীয় এই উৎসব। এসময় যে যেখানেই অবস্থান করুক না কেন— অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকে খাবার। আর ‘ভোজনরসিক’ হিসেবে বাঙালির আলাদা পরিচয়তো রয়েছেই। আনন্দের এই দিনে তাই বেশি বেশিই খাওয়া হয়ে যায়। খাবারের আয়োজনে যেহেতু গোশতই প্রাধান্য পায়। তাই বলা হচ্ছে, একটু রয়ে সয়ে খাওয়া উচিত।

ঈদ উপলক্ষে সবার বাসায়ই থাকে মুখরোচক খাবারের আয়োজন। বৈচিত্র্য আনতে থাকে একই গোশতের থাকে নানা আইটেম। তাই ঈদের দিন গন্তব্য যেখানেই হোক, খাবার চেখে দেখতে গেলেও যেন গলা পর্যন্ত ভরে যায়। এক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগীদের। নজর দিতে হবে কি খাচ্ছি? কতটুকু খাচ্ছি? সেদিকে। ঈদে বেশি সমস্যা হয় খাবারের পরিমাণে। অনেকেই এক সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে চর্বিযুক্ত বা তৈলাক্ত খাবার খেয়ে হজম করতে পারেন না। আবার অধিক পরিমাণে গোশত খাওয়ার ফলে পেট ফাঁপা, জ্বালাপোড়া ও ব্যাথার মতো অস্বস্তি হতে পারে। ঈদের খাবারটা যেহেতু পড়ন্ত দুপুরে বা বিকেলের দিকে খাওয়া হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে সকাল এবং মধ্যদুপুরে ভারী কিছু না খাওয়া। নামাজ পরবর্তী সময়ে তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি ও আমিষ জাতীয় খাবার, যেমন মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা না খাওয়াই ভালো। যাতে পারিবারিকভাবে বা বন্ধুবান্ধবদের বাসায় একটু বেশি খেলেও ক্ষতি না হয়। থাকতে পারেন সুস্থ্য।

অস্বস্তি এড়াতে পান করতে পারেন ডাবের পানি

তবে এসব ভারী খাবারের প্রতিক্রিয়া সামাল দিতে পান করতে পারেন ফলের জুস বা ডাবের পানি। খেতে পারেন বোরহানি, শরবত কিংবা কোল্ড ড্রিংস। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি মৌসুমি ফল খাওয়া যায়। এতে স্বাদ এবং উপকার দু’ইই পাবেন। যাদের বয়স কম এবং শারীরিক কোনো সমস্যা নেই, তারা নিজের পছন্দমতো সবই খেতে পারেন এবং তাদের হজমেরও কোনো সমস্যা হয় না, শুধু অতিরিক্ত না হলেই হলো, বিশেষ করে চর্বি জাতীয় খাদ্য। অতিরিক্ত গোশত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। যাদের এনাল ফিশার ও পাইলস জাতীয় রোগ আছে, তাদের পায়ুপথে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি বাড়তে পারে, এমনকি পায়ুপথে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি, শরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে খাবেন।

যাদের আইবিএস আছে, তারা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। দাওয়াতে গেলে পরিমিত খান, অতিভোজন পরিহার করার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়বেন না। খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর বিছানায় যাবেন। খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাবেন না, এতে হজম রসগুলো পাতলা হয়ে যায়। ফলে হজমে অসুবিধা হয়। তাই খাওয়ার অন্তত এক ঘণ্টা পর পানি পান করুন। তবে খাবারের মাঝে বোরহানি খেতে পারেন। পশুর চর্বি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অনেকে রান্না সুস্বাদু হবে মনে করে খাবারে অতিরিক্ত চর্বি যোগ করেন। এটা ঠিক নয়। যতটুকু সম্ভব মাংসের চর্বি ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো।

উচ্চ-মাত্রার এলার্জি রয়েছে যাদের তাদের গরু বা মহিষের গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা।