আশা করি ফুটবল আমার কাছে তার পাওনা শোধ করবে!

আশা করি ফুটবল আমার কাছে তার পাওনা শোধ করবে!

লিওনেল আন্দ্রেস মেসি কুচ্চিতিনি সময়ের সেরা ফুটবলারদের একজন, যদিনা তিনি নিজেই সেরা। বার্সেলোনার হয়ে সব শিরোপাই জিতেছেন, যা একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে জেতা সম্ভব। রয়েছে অগণিত ব্যক্তিগত পুরস্কার। খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপ, যার দু’টিতেই ছিলেন টিম আর্জেন্টিনার মূল ভরসা। গত আসরে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েও দেশকে জেতাতে পারেননি আরাধ্য বিশ্বকাপ। ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে ভেঙে যায় সকল স্বপ্ন। রাশিয়ায় এবারের আসরে নামবেন অপূর্ণতা ঘোচানোর মিশনে। এবারও দলের এবং ভক্তদের নির্ভরতার প্রতীক ১২৪ ম্যাচে ৬৪ গোল করা আর্জেন্টিনিয়ান অধিনায়ক। তার আগে দল, নিজের এবং ফুটবল সম্পর্কে কথা বলেছেন ফিফা ডটকমের মুখোমুখি হয়ে। সাক্ষাৎকারটি জবান-র পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন দেওয়ান মারুফ শুভ।

 

ফিফা : রাশিয়া কড়া নাড়ছে, ব্রাজিল বা জার্মানির সাথে তুলনা করলে আর্জেন্টিনা দলের কি অবস্থা এখন?

লিওনেল মেসি : বিশ্বকাপে আমাদের দল ভালো আকারে থাকবে কারণ আমরা প্রতিনিয়তই পরিণত হচ্ছি। আমাদের এমন অনেক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে যা আমাদের প্রত্যাশা বা প্রাপ্য ছিলনা। ভেনেজুয়েলা বা পেরুর সাথে ম্যাচ দুইটা আমরা সহজেই জিততে পারতাম। যদি আমরা জিতে যেতাম তাহলে আমাদের শেষ মুহুর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হত না। দলের এই অপাবস্থার পরিবর্তন হবে।

 

চিলি বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়ায় অবাক হয়েছেন?

মেসি : হ্যা, আর সবার মতই আমিও বিস্মিত। চিলি শেষ দুইটা কোপাতেই শিরোপা জয় করেছে। তারা খুবই ভালো দল এবং অনেকগুলো ভালো খেলোয়াড় রয়েছে। চিলির বাদ পড়া থেকে এটাই প্রমাণিত হয় দক্ষিণ আমেরিকায় কোয়ালিফায়ার কত কঠিন, কারণ কেউই আপনাকে জেতার সুযোগ দিবেনা। বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর বা কলম্বিয়া গিয়ে খেলা মোটেও সহজ নয়। তাছাড়া রয়েছে ব্রাজিলও। দলগুলোর মধ্যে ব্যবধান যেমন কমছে ঠিক তেমনি বিশ্বকাপের মূল পর্বে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।

 

২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপের ক্ষত শুকিয়েছে?

মেসি : না! আমি জানিওনা আদৌ এই ক্ষত শুকাবে কিনা। আমাদের এটা নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। বিশ্বকাপের স্মৃতি খুবই মধুর, এবং একই সাথে তিক্ত কারণ ফাইনালে আমরা হেরেছি। এটা কখনোই ভুলার নয়।

 

আপনার বয়স এখন ত্রিশ। এটা নিয়ে আপনি কেমন বোধ করছেন? আপনি কি আপনার কাঙ্ক্ষিত অবস্থানে পৌছতে পেরেছেন?

মেসি : সত্যি বলতে আমি কখনো এটা নিয়ে চিন্তা করি নাই। আমি কখনো ভাবিনাই ত্রিশ বছর বয়সে আমি কোথায় থাকব বা কোথায় আমার থাকতে হবে। আমি বলব আমি বেশ আছি মাঠে এবং মাঠের বাইরে। এবং আমি আমার বর্তমান অবস্থা নিয়ে খুশি।

 

সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সব কিছুর পরিবর্তন হয়। আপনার ফুটবল খেলায় পরিবর্তন এসেছে?

মেসি : হ্যা, অবশ্যই। আপনি সব সময়ই পরিণত হন, দক্ষতা বাড়ে এবং সময়ের সাথে সাথে নতুন অনেক কিছু শেখা হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাঠের অভিজ্ঞতাও বেড়েছে।

 

আর্জেন্টিনার খেলায়ও এটা প্রকাশ পেয়েছে। ইকুয়েডরের সাথে কোয়ালিফায়িং ম্যাচটাকে আপনার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কতটা গুরুত্বপুর্ণ ছিল?

মেসি : এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ বিশ্বকাপ খেলতে না পারাটা অনেক বড় ধাক্কা হত আমাদের জন্য। প্রথমত পুরো দলের জন্য একটা বড় ধাক্কা হত এবং আমার জন্যে এবং ব্যক্তিগত জীবনে। আমি জানি না আমি কীভাবে নিতাম ব্যাপারটা। এবং আর্জেন্টিনার মানুষ এবং ভক্তরাও ভেঙে পড়ত। রাশিয়া যেতে না পারাটা আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সবচেয়ে নেতিবাচক ঘটনা হত।

 

ম্যাচটা এমন গুরুত্বপুর্ণ ছিল বলেই কি আপনার মনে হয়েছিল এমন একটা পারফর্মেন্স আপনার দিতে হবে?

মেসি : না, আমি ঠিক জানিনা। জাতীয় দলের হয়ে আমি ভাল খেলছিলাম। আমি শুধু এতটুক বলতে পারি, যা হয়েছিল সেটা আমার জন্যে বিশেষ এবং গুরত্বপুর্ণ মুহুর্ত ছিল।

 

রাশিয়ার জন্য কোয়ালিফাই হওয়ার পর, কোচ হোর্হে সামপাওলি বলেছিলেন, “ফুটবলের কাছে মেসির একটা বিশ্বকাপ  পাওনা”। আপনি এটা শুনেছিলেন? আপনার কি মনে হয়?

মেসি : হ্যা, আমি শুনেছি, এবং সামপাওলি নিজেও আমাকে এটা বলেছিল। আমি আশা করি ফুটবল আমার কাছে তার পাওনা শোধ করবে! (হাসি)