বৈঠকে কিমের চাইতে ট্রাম্পেরই সাফল্যক্ষুধা বেশি

বৈঠকে কিমের চাইতে ট্রাম্পেরই সাফল্যক্ষুধা বেশি

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাফল্যের ক্ষুধা বেশি বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে। বৈঠক শেষে ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলেছেন, বৈঠক অনেকের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়েছে। কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক অচলাবস্থা নিয়ে আলোচনার পর তারা একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের ক্যাপেল্লা হোটেলেন নজিরবিহীন এক বৈঠকে বসেন কিম-ট্রাম্প। বৈঠকে মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির সময় ক্যাপেল্লা হোটেলের গার্ডেনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এসময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে ট্রাম্পের পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে এর অাগে উত্তর কোরিয়ার এই নেতা ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠকের ব্যাপারে বলেন, শান্তির জন্য একটি ভালো সূচনা।

এটা অনেকটা ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের চীন সফরের মতো হতে পারে, যার পর থেকে চীনের রূপান্তর ঘটেছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, ঐতিহাসিক সাক্ষাতের শুরুর পর্বে কাপেলা হোটেলের দুই পাশ থেকে দুই নেতা হেঁটে এসে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার পতাকা দিয়ে সজ্জিত একটি দৃশ্যপটের সামনে প্রথমবারের মতো পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে দৃঢ়ভাবে করমর্দন করেন।

গণমাধ্যমের সামনে সংক্ষিপ্ত ওই পর্বে দুই নেতা প্রাথমিক মন্তব্য বিনিময় করেন।

কিম বলেন, আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে খুশি হলাম মিস্টার প্রেসিডেন্ট।

উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমি সত্যি গর্ব অনুভব করছি। আমরা মহৎ একটি আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছি এবং তা ব্যাপকভাবে সফল হবে বলে আশা করছি। আমার ধারণা এটি সত্যিই সফল হতে যাচ্ছে এবং আমাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক হবে, আমার কোনো সন্দেহ নেই।

উত্তরে কিম বলেন, ওয়েল, এ পর্যন্ত আসাটা সহজ ছিল না। অতীতে আমাদের পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা বসানো ছিল, কিন্তু আমরা সেগুলো সব অতিক্রম করেছি এবং আজ আমরা এখানে।

এসময় এক প্রতিবেদক ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করেন, কিম সম্পর্কে আপনি কী জেনেছেন?

ট্রাম্প বলেন, আমি জানালাম, কিম একজন মেধাবী মানুষ। এছাড়াও আমি জানলাম, তিনি তার দেশকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। এরপর তারা আবারো দুই হাত প্রসারিত করে করমর্দন করেন। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আরও বহু সাক্ষাৎ হবে।

তবে কাপেলা হোটেলে পৌঁছে তাদের লিমুজিন থেকে নামার সময় উভয় নেতাকেই বেশ সিরিয়াস মনে হয়েছে বলে জানিয়েছেন রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক।

বৈঠকে তারা একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে চুক্তিপত্রের ছবির কিছু অংশ প্রকাশ হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, কিম শিগগিরই উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণরুপে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন। এই বৈঠককে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে কারণ এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১১ জন প্রেসিডেন্টও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনে সফল হননি। এ যাত্রায় ট্রাম্প যদি পারমানবিক নিরস্ত্রীকরণ করতে সক্ষম হন কিনা সেটি দেখার বিষয়।