ফুটবল দিনকে দিন জটিলতর হয়ে উঠছে : জাবি অ্যালোন্সো

ফুটবল দিনকে দিন জটিলতর হয়ে উঠছে : জাবি অ্যালোন্সো

জাবি অ্যালোন্সো। স্পেন জাতীয় দলের সাবেক এই মিডফিল্ডার ছিলেন নিজ সময়ের বিচক্ষণ এক ফুটবলার। ফুটওয়ার্ক, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, ফ্রিকিক দক্ষতায় দলের ভরসা আর বিপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে থাকতেন। খেলেছেন লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখের মতো দলে। খেলা ছেড়ে এখন কোচিংয়ের ট্রেনিং নিচ্ছেন স্পেনের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ জেতা অ্যালোন্সো। আরেকটি বিশ্বকাপ যখন দোরগোড়ায়। ফিফা ডটকমের মুখোমুখি হয়ে বিশ্বকাপ ও স্পেনের ফুটবলসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ফিফা ডটকমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে।

 

ফিফা : আপনি ফুটবলের বাইরে আছেন বছর খানেক। কেমন লাগছে?

জাবি অ্যালোন্সো : ভালো। আমার জীবনের গতি পরিবর্তন হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্যে আমার অনেক ভাবতে হয়েছে। হ্যাঁ আমি খেলা মিস করি কিন্ত এর সাথে মানিয়ে নিচ্ছি।

 

কোচিংয়ের ব্যাপারে কিভাবে আগ্রহী হলেন? একজন কোচ হওয়ার পরে খেলোয়াড়ি জীবনে পাওয়া কোচদের বুঝতে সুবিধা হচ্ছে?

অ্যালোন্সো : আপনি যখন এমন একটা কোর্স করবেন তখন আপনি ভুলে যাবেন আপনি আগে কেমন ছিলেন এবং আপনি তেমনি হতে চাইবেন যা আপনি হতে চান। এবং এটা অবশ্যই ভালো। আমি সব সময়ই বুঝতে চেয়েছি একটা কোচের চাকরি কেমন হতে পারে। খেলোয়াড় হওয়ার সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই।

 

বর্তমান স্পেন বস হুলেন লপেতেগুইকে নিয়ে কেমন আশাবাদী আপনি?

অ্যালোন্সো : আমি মনে করি সে খুব ভালো করছে। সে জানে সে কি করছে। সে তার খেলোয়াড়দের ঠিক তাই বলে যা সে বলতে চায়, এবং এটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি এটা করতে না পারেন তাহলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না। এই দিক থেকে আমি বলব জাতীয় দল ভালো করছে।

 

বিশ্বকাপ এবং ইউরো জেতা দলের সাথে বর্তমান দলের কোন সাদৃশ্য খুঁজে পান?

অ্যালোন্সো : বল নিয়ন্ত্রণ করা, পাসিং ফুটবলের মাধ্যমে খেলা এবং সরাসরি আক্রমণে না যাওয়া, পুরো খেলা নিয়ন্ত্রণ করার যে ধারণা সেগুলো এখনো আছে। হ্যাঁ আমি বলব অনেকটা একই।

এছাড়া ভিন্ন খেলায় ভিন্ন কৌশল অনুসরণ করার ব্যাপারও রয়েছে, কারণ ফুটবল দিনকে দিন জটিলতর হয়ে উঠছে। খেলার ধরণের সাথে খাপ খাওয়াতে হবে।

 

প্রতিভার কথা বাদ দিলে শিরোপাজয়ী স্পেন দলের আর কি গোপন রসদ ছিল?

অ্যালোন্সো : টিম স্পিরিট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যে সবাই মিলে যুদ্ধ করতে হবে। এক হয়ে কাজ করতে হবে। আপনি যদি এটা করতে ব্যর্থ হন তাহলে সব বিফলে যাবে। আমার মনে হয় বর্তমান দলেও এটা রয়েছে। এবং এই দলে রয়েছে অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় যাদের এখনো দলকে অনেক কিছু দেওয়ার বাকি আছে। সব কিছু মিলে এটা একটা ইতিবাচক দিক আমাদের জন্যে।

 

গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারের রাশিয়া সফরকারী ২৩ সদস্যের দলই কম সমালোচিত হয়েছে। বিপক্ষ দলের রক্ষণদূর্গ ভাঙার জন্যে এরা কতটা প্রস্তত?

অ্যালোন্সো : আমাদের এমন অনেক খেলোয়াড় আছে যারা মাঠে বিপক্ষ দলের রক্ষণভাগে জায়গা করে নিতে ওস্তাদ, এবং দিয়েগো কস্তা এবং অ্যাসেনসিও রয়েছে যারা সুযোগ পেলেই রক্ষণে ফাঁটল ধরাতে পারবে। আমার মনে হয় এবারের স্পেন দল আমাদের  শিরোপাজয়ী দলের থেকেও বহুমুখী। আমাদের সময় বিপক্ষ দলের পেনাল্টি বক্সের সামনে যেতে না পারলে আমাদের জন্যে গোল দেওয়া কঠিন হয়ে যেত।

আমাদের গ্রুপে পর্তুগালের মত দল রয়েছে যারা রক্ষণভাগ আগলে বসে থাকে এবং সুযোগের সন্ধানে থাকে, এমন ক্ষেত্রে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে জয়ের জন্যে। মাঝে মাঝে আপনার প্রয়োজন হবে ভিন্নভাবে খেলার। এবং প্রয়োজনে এমন উদ্যোগ নিতে পারা কৌশলী খেলোয়াড় যেকোন দলের জন্যে মারাত্মক।

 

লা রোজাদের এবার ফেভারিট ধরা হচ্ছে। এবার তারা কেমন করতে পারে বলে মানে করেন? এছাড়া আর কোন দলের সুযোগ রয়েছে?

অ্যালোন্সো : আমি স্পেনকে ফেভারিট হিসেবেই রাখছি কারণ এই মুহূর্তে এমন কোন দল দেখছি না যারা স্পেনের থেকে ভালো। যদিও আমি জানি না খেলায় কী হবে। জার্মানি এবারের বিশ্বকাপের আরেকটা বড় দাবিদার। তারা অনেক শক্তিশালী দল এবং সব সময়ই শিরোপা জয়ের কাছাকাছি যায়। তাছাড়া তারা এই মুহুর্তে চ্যাম্পিয়ন দল। যেভাবে তারা খেলছে এবং দলের নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের যে সামর্থ্য, আমি বিস্মিত হবো যদি জার্মানি সেমিফাইনালে যেতে না পারে। এবং তৃতীয় দল হিসেবে ব্রাজিল ফেভারিট। এই তিন দল সবার ওপরে, তারপরে আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স অথবা হয়তো নতুন কোন দল চমক দেখিয়ে দেবে।

 

অনেক বছর পরে এই প্রথমবারের মত দর্শক হিসেবে বিশ্বকাপ খেলা দেখবেন। কোন বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে?

অ্যালোন্সো : আমি বড় খেলাগুলো সবার সাথে মিলে দেখতেই পছন্দ করি। এবং আমি সম্ভবত ফাইনাল দেখতেও যাব। টিকিটও হয়ে গেছে, এখন শুধু স্পেনের ফাইনালে যাওয়ার পালা (হাসি)।