পাক-ভারত দুই গোয়েন্দা প্রধানের বৈঠক কি হতে যাচ্ছে?

পাক-ভারত দুই গোয়েন্দা প্রধানের বৈঠক কি হতে যাচ্ছে?

সামনেই পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। এরই মধ্যে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্ক নতুন করে সামনে এসেছে। ইস্যু ‘কাশ্মির’।  যদিও নির্বাচনের জন্য ‘কাশ্মির’ প্রসঙ্গ খুব একটা প্রভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে না। তারপরও গুঞ্জন উঠেছে গোয়েন্দা পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে।

সম্প্রতি পাকিস্তানের সাথে ভারতীয় প্রশাসনের প্রাক্তন কর্মকর্তারা  আলোচনায় বসেন। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের কাছে এক অভিনব প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান সরকার।সে আলোচনার টেবিলে প্রস্তাবটি দেয়া হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে। প্রস্তাবটি হল— পাকিস্তানের সেনাপ্রধান, গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাভিদ মুখতার এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নাসির খান জানজুয়া দিল্লি আসবেন। সেখানে ভারতের সেনাপ্রধান, গোয়েন্দা সংস্থা র-(রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং) এর প্রধান অনিল ধাসমনা এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে তাঁরা বৈঠকে বসবেন। একেবারে রুদ্ধদ্বারে হবে সেই বৈঠক। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হবে কাশ্মির সমস্যার সমাধান।

অতি সম্প্রতি পাঠানো এই প্রস্তাব এখনও মোদি সরকার গ্রহণ করেনি বললেও তা আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। চার বছর আগে অজিত ডোভাল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়ার পর সংঘাতের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানকে দমন করার পথ বেছে নেয়। সীমান্ত পেরিয়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালায় ভারত। কিন্তু তাতে কাশ্মিরে মুক্তিকামীদের লড়াই কমেনি, উপরন্তু বেড়েছে। ‘ডোভাল ডকট্রিন’ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এখন নরেন্দ্র মোদি নিজে কাশ্মির গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সঙ্গে বৈঠক করে কাশ্মিরে উন্নয়নের কথা বলে ইস্যু ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।

অতীতে ‘ডোভাল নীতি’ সমর্থন করে আলোচনার সব রাস্তা বন্ধ করেছে দিল্লি। পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক আনুষ্ঠানিক ভাবে বন্ধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বার বার বলছেন— পাকিস্তান সন্ত্রাস বন্ধ না-করলে আলোচনায় বসা হবে না। কিন্তু প্রকাশ্যে এ কথা বললেও সম্প্রতি প্রাক্তন পররাষ্ট্রসচিব এম কে রসগোত্রা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন বিশেষ সচিব বিবেক কাটজুর মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে একদফা ‘ট্র্যাক টু’ আলোচনা শুরু করেছেন মোদি। সূত্রের খবর, সেই আলোচনাতেই পাকিস্তান এই প্রস্তাবটি দিয়েছে।

পাক সেনাপ্রধান কামার বাজওয়া সম্প্রতি বার বার বলছেন, পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে আলোচনা চায়। আবার পাক সেনাবাহিনীর কাশ্মির বিষয়ক বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ইসমাইল খান এবং ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে এক সঙ্গে কেনিয়ায় কাজ করেছিলেন। দিল্লিতে কর্মরত পাকিস্তানি হাই কমিশনার সোহেল মাসুদ এই প্রস্তাব সম্পর্কে বলেন, ‘‘দু’দেশের সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দা প্রধানেরা দরজা বন্ধ করে আলোচনায় বসলে ক্ষতিটা কী?’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মির সমস্যার সমাধান চাই।’’

তবে কি পাকিস্তান-ভারত গোয়েন্দা পর্যায়ের বৈঠক হতে যাচ্ছে। আর হলেই বা লাভটা কার? সেটাই দেখার অপেক্ষা।