মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দেশটিতে আত্মহত্যার হার ৩০ শতাংশ বেড়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহণনের হার ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকার পরিচালিত গবেষণায় এর প্রতিকারে একগাদা সুপারিশও করা হয়েছে।
তবে এসব প্রয়োগে বিশ্ব পরাশক্তির এই দেশটির ব্যস্ত নাগরিক জীবনে কোন সুফল আদৌ আসবে কিনা তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত নব্বইয়ের দশকের শেষ দিককার সময় থেকে এ পর্যন্ত ২৫টি রাজ্যে আত্মহত্যার হার ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
তবে ১৯৯৯ থেকে এ পর্যন্ত আত্মহত্যায় নিহত ৫৪ শতাংশের মানসিক অবস্থার বিবরণ জানা যায়নি। মৃত্যুর সময় তাদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল তা না জানতে পারাটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি ত্রুটি আকারে দেখা হচ্ছে।
নারী-পুরুষ, জাত-ধর্ম নির্বিশেষে নানা বয়সে আত্মহত্যার মাধ্যমে জীবননাশের পথ বেছে নিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সংখ্যক মানুষ। মানসিক অসুস্থতা, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, সম্পর্কে আস্থাহীনতা ও মাদকের ব্যবহারের কারণে বেশিরভাগ মানুষ আত্মহত্যা করে থাকে বলে জানা যায়।
শুধুমাত্র ২০১৬ সালেই ৪৫ হাজার মার্কিন নাগরিক আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিডিসি’র প্রিন্সিপাল ডেপুটি ডিরেক্টর আনা সুসাত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেশে মৃত্যুর প্রধান তিনটি উপায়ের একটি হয়ে উঠেছে আত্মহত্যা। আত্মহত্যাকারীর নিকটজন, পরিবার বা কমিউনিটির লোকজনের যে কষ্ট তা এই পরিসংখ্যানে তুলে ধরা সম্ভব নয়।”
২০২৫ সালের মধ্যে আত্মহত্যা ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সুইসাউড প্রিভেনশন ফাউন্ডেশন।
রাজ্যভেদে এই প্রবণতা ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় বেড়েছে। ডেলাওয়ারে বেড়েছে ৫.৯ শতাংশ আর সবচাইতে বেশি ৫৭.৬ শতাংশ বেড়েছে নর্থ ডাকোটায়। শুধুমাত্র নেভাদায় আত্মহত্যার হার অপরিবর্তিত রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বন্দুিকের সাহায্যেই সবচাইতে বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে।
এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপক খরচের কারণে ৫৪ শতাংশ আত্মহত্যাকারীর মানসিক অবস্থা জানা যায়নি। আর এই বিপুল পরিমাণ আত্মহত্যা বা আত্মহণন প্রচেষ্টায় প্রতি বছরে ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে আনুমানিক ৭০ বিলিয়ন ডলার।