মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন ভঙ্গকারী ও প্ররোচনামূলক আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ। তিনি বলেছেন, আমেরিকা একের পর এক আন্তর্জাতিক চুক্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার চালিয়ে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে আমেরিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুর্বৃত্তের মতো আচরণ করে যাচ্ছে।
বিশ্বের কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট লেখা পৃথক চিঠিতে এ আহ্বান জানিয়েছেন জাভেদ জারিফ। আমেরিকা ও ইউরোপীয় কয়েকটি দেশের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা ‘জেসিপিওএ’ থেকে গত ৮ মে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার জের ধরে এ চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে জারিফ বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদনের মাধ্যমে ওই সমঝোতা একটি আন্তর্জাতিক আইন হিসেবে চিহ্নিত হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে আমেরিকা। ওয়াশিংটনের এ ধরনের ঔদ্ধতপূর্ণ আচরণের নিন্দা জানাতে আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। চিঠিতে তিনি আরো বলেন, পরমাণু সমঝোতা থেকে নিজে বেরিয়ে যাওয়ার পর এখন অন্যান্য দেশকেও এটি থেকে বের করে নেয়ার জন্য দুর্বৃত্তের মতো আচরণ করছে আমেরিকা। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের মতো একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা ও কার্যকারিতাকে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে দেশটি।
আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও জেসিপিওএ-র অন্যন্য সদস্য দেশ জানিয়েছে, তারা আমেরিকাকে ছাড়াই এই চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যাবে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিখুঁত, স্পর্শকাতর ও ভারসাম্যপূর্ণ বহুপক্ষীয় আলোচনার ফল এই চুক্তি। তা নিয়ে পূণরায় আলোচনা সম্ভব নয়।
এর পূর্বেও তেহরান থেকে হুশিয়ারি দেয়া হয়েছিলো যে এই চুক্তির ক্ষেত্রে কোন ‘প্ল্যান-বি’ নেই। এবং এ বছর এপ্রিলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনকে উদ্দেশ্য করে এক টুইট বার্তায় জাভেদ জারিফ ট্রাম্পকে চুক্তি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সতর্ক করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সম্পাদিত জেসিপিওএ চুক্তির মেয়াদ ছিল দশবছর। কিন্তু তিন বছর যেতে না যেতেই ‘ইরান চুক্তির মানছে না’ এমন অজুহাতে নিজেরাই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন। গত ৮ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। একই সাথে ইরানের উপর পূর্বের ‘উচ্চ মাত্রা’র অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চালুর ঘোষণা দেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরানের সঙ্গে নতুন করে কোনো সমঝোতা অর্জনের জন্য তেহরানকে বেশ কিছু শর্ত বেধে দেন। রাজধানী তেহরান তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রত্যাখান করে।