দারুচিনি চোখে ভাসতেই পোলাওর ঘ্রাণ এসে মন উতলা করে। আসুন জেনে নেই দারুচিনির জানা-অজানা বহু উপকারিতার কথা।
মাঝারি উচ্চতার চিরহরিৎ ভেষজ-গুণসম্পন্ন বৃক্ষবিশেষের মিষ্টিস্বাদ সুগন্ধ শুকনো বাকলকেই (মশলারূপে ব্যবহৃত) আমরা ডালচিনি বা দারুচিনি বলি। খেতে একটু ঝাঁ ঝাঁ মিষ্টিজাতের দারুচিনি খাবারে ভিন্ন মাত্রার সুগন্ধ বাড়ায়। এছাড়াও এর রয়েছে ভেষজ গুণাবলি।
১. ব্যাকটেরিয়া জনিত পেটের অসুখ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। দারুচিনিতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা পেটে অসুখ হতে পারে তা থেকে বাঁচায়। যারা পেট ব্যথায় ভুগছেন তারা দিনে দুইবার দারুচিনি চা খেলে উপকার পাবেন।
২. দারুচিনি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। যারা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা নিয়মিত দারুচিনি যে কোনোভাবে খেলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধে দারুচিনি ভূমিকা রাখে।
৪. স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করতে দারুচিনি অকল্পনীয় ভূমিকা রাখে।
৫. দারুচিনি পৃথিবীর সেরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে অন্যতম একটি।
৬. পেশি এবং জয়েন্ট পেইন কমাতে দারুচিনি সাহায্য করে। হালকা গরম পানিতে এক চামচ মধু এবং এক চা চামচ দারুচিনি গুড়া মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করলে কয়েকদিনেই উপকারিতা বোঝা যাবে।
৭. দারুচিনিপেস্ট কপালে মলমের মতো আস্তে আস্তে মাখলে মাইগ্রেনের ব্যথা কমে যায়। দারুচিনি চা খেলেও মাইগ্রেনের ব্যথায় উপকার পাওয়া যায়।
৮. মুখে যাদের গন্ধ থাকে তারা দারুচিনি চাবাতে পারেন অথবা দারুচিনি গুড়া পেস্টের সাথে মিলিয়ে ব্রাশ করতে পারেন।কয়েকদিনেই গন্ধ চলে যাবে। দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির সমস্যায় দারুচিনি তেল ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
৯. ব্রণ সমস্যা দারুচিনিতেও সমাধান হয়ে থাকে। এক চা চামচ লেবুর রসের সাথে আধা চা চামচ দারুচিনি গুড়া মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখের ত্বক পরিস্কার করে লাগাতে হবে। ত্বক একটু জ্বললেও ঘাবড়াবার কিছু নেই। আধঘন্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক পরিস্কার করে নেবেন। সপ্তাহে তিনদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
১০. দারুচিনি রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে হার্ট ভালো থাকে।
১১. ঋতুস্রাবের আগে মেয়েদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য পরিবর্তনের কারণে কিছু সমস্যা হয়। দারুচিনি এই সময় বিশেষ প্রভাব রাখে ভারসাম্য রক্ষায়।
১২. খাদ্যের বিষক্রিয়া থেকে আক্রান্ত হলে দারুচিনি খেলে উপকার পাওয়া যায়। এই মশলা পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া দমনে সহায়তা করে।
১২. ওজন কমাতে খুবই ভালো। এক মগ পানিতে আধা চা চামচ দারুচিনি গুড়া দিয়ে জাল দিতে হবে। ঠান্ডা হলে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে খেলে ওজন কমতে থাকবে। অবশ্যই পাশাপাশি অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।
১৩. একমগ পানি আধা চা চামচ দারুচিনি দিয়ে ফুটিয়ে ফ্রেশ আধা চা চামচ আদার রস মিশাতে হবে তারপর গ্রীন টি দিতে হবে।এই মিশ্রণ হালকা গরম বা ঠাণ্ডা করে রাতে ঘুমানোর আগে খেলে ওজন কমতে থাকবে।
১৪. পানিতে দারুচিনি ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে সারাদিন একটু একটু খেলে শরীর ঝরঝরে থাকবে।
আমরা চাইলে মাঝে মধ্যে পোলাও মাংশ খেয়েও আমরা ওজন কন্ট্রোল করতে পারি দারুচিনির মাধ্যমে। এবং রান্নাঘরে সকলের উঁকি দেয়া বেড়ে যাক দারুচিনির সন্ধানে।