ভারতীয় হিন্দু ব্রাক্ষ্মণ বঙ্কে লাল, বয়স মাত্র ১৮ বছর, কিন্তু ধর্মীয় বিষয় আশয়ে তার প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। একান্ত আগ্রহ থেকে তিনি নিজে নিজেই পড়াশোনা শুরু করলেন। এবং এক পর্যায়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি, ধর্মীয় জ্ঞানের পিপাসা মেটাতে তিনি মদীনায় গমন করেন। সেখানে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং হাদীস শাস্ত্রে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে মিশরের কায়রোতে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেন। আস্তে আস্তে একজন হাদিস বিশারদে পরিণত হন।
তিনি মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকতায় যোগ দেন এবং দিনে দিনে হাদিস শাস্ত্রের পাণ্ডিত্য লাভ করেন। এই সময়ে হাদিসের মূল্যবান কিছু বইও তিনি লিখেন করেন। মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি মসজিদের নববীতে দারস দেওয়ার দায়িত্ব পান। দ্বীনি জ্ঞান চর্চার পরিমণ্ডলে এই দায়িত্বকে অত্যন্ত সম্মানজনক মনে করা হয়।
বঙ্কে লালই আজকের শায়খ জিয়াউর রহমান আজমী। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘আল জামি আল হাদিসিস সহীহিস শামিল’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কিতাবটি বিগত ১৪০০ বছরের ইতিহাসে একমাত্র কিতাব বলা যায়, যেখানে শুধুমাত্র সহীহ হাদিসগুলোকেই স্থান দেয়া হয়েছে এবং এতে একটি হাদিসও পুনরাবৃত্তি করা হয়নি। ১৬ হাজার হাদিস সংবলিত এই কিতাবটির সংকলনে ১৫ বছর ব্যয় করেছেন জিয়াউর রহমান আজমী। ২০ খণ্ডের এই কিতাবটির বিনির্মাণে ২০০ টি হাদিসের কিতাবের সহায়তা নিয়েছেন তিনি।
তার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে অারেকটি হচ্ছে হিন্দি ভাষায় ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’ এবং ‘কম্পারেটিভ স্টাডি অন জুদাইজম, ক্রিশ্চিয়ানিটি অ্যান্ড ইন্ডিয়ান রিলিজিওনস’। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল ‘দি জাজমেন্ট অফ দি প্রফেট’। ইসলাম গ্রহণের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন ‘গঙ্গা টু জমজম’।
বঙ্কে লাল (জিয়াউর রহমান আজমী) ১৯৪৩ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড় জেলার বিলার্যগঞ্জ গ্রামে এক হিন্দু বাক্ষ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় হাকিম আইয়ুব নামের এক আলেমের সাহচর্যে তিনি ইসলামের সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হন।