বিশ্বকাপের একবিংশতম আসর বসছে সুদূর রাশিয়ায়। বাংলাদেশে কি এর উত্তেজনা কম? মোটেই না! নিজেরা বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও সাপোর্ট দিতে বাঁধা কিসের? ব্রাজিল আর্জেন্টিনার চিরায়ত তর্কে হালফিলে ভাগ বসিয়েছে পর্তুগাল, জার্মানি, স্পেন। তবু, ব্রাজিল আর্জেন্টিনা সবসময় আলাদা। বাড়ির ছাদে কিংবা উঠোনে, রাস্তায় বা দোকানে, পাল্লা দিয়ে লাগানো হয় দুই দলের পতাকা। এদের আবেদনই অন্যরকম। স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে খেলে যাওয়া হামেস রদ্রিগেজের কারণে বাংলাদেশে কলম্বিয়ারও ভক্ত বেড়েছে, বার্সেলোনার লুইস সুয়ারেজ যেমন বাড়ালেন উরুগুয়ের। বিশ্বকাপ ফুটবলের এবারের আসরে অংশ নেওয়া ৩২ দল আসছে ভিন্ন পাঁচটি অঞ্চল থেকে। সেসব অঞ্চল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ পর্বে আজ থাকছে লাতিন আমেরিকার দলগুলো।
লাতিন আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপে উত্তীর্ণ দলসমূহ…
• উরুগুয়ে
• পেরু
• কলম্বিয়া
• আর্জেন্টিনা
• ব্রাজিল
• উরুগুয়ে
ডাকনাম : লা সেলেস্তে
হেডকোচ : অস্কার তাবারেজ (উরুগুয়ে)
অধিনায়ক : দিয়াগো গদিন
ফিফা র্যাংকিং : ১৭
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ১২
সর্বোচ্চ সাফল্য : চ্যাম্পিয়ন
বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেও ধরে রাখে চ্যাম্পিয়নের তকমা। ১৯৩০ এর পর ১৯৫০। মাঝে ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ বিশ্বকাপ ইউরোপে অনুষ্ঠিত হওয়ায় বয়কট করেছিল প্রথম বিশ্বকাপের আয়োজক দেশটি। ১৯৫০ এ ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নেয়া উরুগুয়ে এরপর ১৯৫৪, ১৯৭০, ২০১০ এ শেষচারে গেলেও আর কখনো ফাইনাল খেলতে পারেনি। লা সেলেস্তেদের বড় শক্তি কোচ অস্কার তাবারেজ। ২০০৭ সাল থেকে কোচিং করাচ্ছেন তিনি। তার অধীনে দুটো বিশ্বকাপও খেলেছে উরুগুয়ে। দিয়াগো ফোরলান, লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানিদের নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় দলকে চতুর্থ করেছেন। সর্বশেষ আসরে রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে বিদায় নেওয়া উরুগুয়ে এবার প্রত্যাশা করছে দারুণ সম্ভাবনার। বার্সেলোনার সুয়ারেজ, পিএসজির কাভানি, অ্যাতলেটিকোর গদিনরা মিলে সোনালি অতীত হয়ত ফিরিয়ে আনতে পারবে না, তবু চেষ্টা করতে ক্ষতি কী! গ্রুপ ‘এ’ তে সৌদি আরব, মিশর, স্বাগতিক রাশিয়ার সাথে প্রতিযোগিতা করবে তাবারেজ বাহিনী।
• পেরু
ডাকনাম : লস ইনকাস
হেডকোচ : রিকার্ডো গারেসা (আর্জেন্টিনা)
অধিনায়ক : আলবার্তো রদ্রিগুয়েজ
ফিফা র্যাংকিং : ১১
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ৪
সর্বোচ্চ সাফল্য : কোয়ার্টার ফাইনাল

১৯৩০ সালের পর দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে পেরুর লেগেছে গোটা চার দশক। ৪০ বছর বাদে ১৯৭০ বিশ্বকাপে ফেরাটা চমৎকার হয়েছে পেরুভিয়ানদের জন্য। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে হেরে যায় সে আসরের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের কাছে। প্রথম দল হিসেবে ১৯৭০ বিশ্বকাপে ফিফা ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ডও পায় পেরু। এরপর ১৯৭৮ ও ‘৮২ বিশ্বকাপেও খেলে তারা। ‘৭৮ এ দ্বিতীয় রাউন্ড এবং ‘৮২ তে প্রথম রাউন্ড হতে বিদায় নেয় লাল সাদা জার্সির পেরু। ‘৮২ পর কেটেছে ৩৬ বছর, মাঠে গড়িয়েছে আটটি আসর। কিন্তু পেরু আর আসতে পারেনি মহারণের মহামঞ্চে। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হল। বাছাই পর্বে পঞ্চম হওয়াতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হতে হয় প্লে-অফে। কিউইদের ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করে বিশ্বকাপে পঞ্চম অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে ‘সি’ গ্রুপে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও ডেনমার্কের সঙ্গে থাকা পেরু।
• কলম্বিয়া
ডাকনাম : লস ক্যাফেটেটোর্স
হেডকোচ : হোসে পেকারম্যান (আর্জেন্টিনা)
অধিনায়ক : রাদামেল ফ্যালকাও
ফিফা র্যাংকিং : ১৬
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ৫
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সাফল্য : কোয়ার্টার ফাইনাল
লাতিন আমেরিকার কনমেবল অঞ্চলের অন্যতম সমীহ জাগানিয়া দল কলম্বিয়া। কলম্বিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ইউরোপা মাতানো তরুণরা। অধিনায়ক ফ্যালকাও, হামেস রদ্রিগেজ, সাবেক মিলান তারকা কার্লোস বাক্কা, আর্সেনাল গোলরক্ষক দাভিদ ওসপিনাদের যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে বিশ্বকাপে ভালকিছু করার। সর্বশেষ ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে কফি উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় সেরা দেশটি। গেল আসরেই গ্রেটেস্ট শো’তে নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্যের দেখা পায় কার্লোস ভালদেরামার উত্তরসূরিরা। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত উঠে চমকে দেয় সবাইকে। কলম্বিয়ানরা বিশ্বআসরে বরাবরই চমক দিয়ে আসছে। ১৯৫৮ সালে প্রথমবার সুযোগ পায় তারা। প্রথম ম্যাচেই উরুগুয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র। পরের ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়। ১৯৬২তে আবারো বিশ্বকাপে, আবারো চমক। এবারও উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলা পড়ে। ২-১ গোলে হারলেও লড়ে যায় সমানতালে। দ্বিতীয় ম্যাচটা সম্ভবত রূপকথা! ইউরোপিয়ান কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ৪-৪ গোলে ড্র। সবচেয়ে বিস্ময়কর হচ্ছে সোভিয়েত গোলরক্ষকের নাম লেভ ইয়াসিন, যিনি কি না মতান্তরে সর্বকালের সেরা গোলরক্ষকই। পরের ম্যাচে যুগোস্লাভিয়ার কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফেরে কলম্বিয়া। তারপর দীর্ঘ বিরতি। ফের ১৯৯০ বিশ্বকাপে। আরব আমিরাতকে ২-০ গোলে হারিয়ে পরের ম্যাচে যুগোস্লাভিয়ার কাছে ১-০ তে হার, শেষ ম্যাচে পূর্ব জার্মানির সাথে ১-১ ড্রয়ে প্রথমবারের মত নকআউট পর্বে যায় তারা। সেখানে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে হেরে থামে স্বপ্নযাত্রা। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশা ছিল। বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনাকে ৫-০ গোলে হারানোসহ দারুণ ফর্মে ছিল তারা। কিন্তু পেরুতে পারেনি গ্রুপপর্বই। তারপর আবার শীতনিদ্রা। ২০ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপে। গোল্ডেন বয় হামেসের দুরন্ত ফর্মে চেপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে দলটি। কলম্বিয়া দলের বিশ্বকাপ খেলায় রয়েছে কাকতালীয় এক মিল। এটি তাদের ষষ্ঠ অংশগ্রহণ। ‘৫৮ র পর ‘৬২, ‘৯০ র পর ‘৯৪, ‘১৪ সালের পর ‘১৮। প্রতিবারই টানা দুবার করে খেলেছে তারা। তবে এসব নয়, দেখার পালা ‘এইচ’ গ্রুপে জাপান, সেনেগাল আর পোল্যান্ডের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে পরের রাউন্ডে যেতে পারে কি না পেকারম্যানের শিষ্যরা।
• ব্রাজিল
ডাকনাম : ক্যানারিনহো, সেলেসাও
হেডকোচ : লিওনার্দো বাচ্চি (ব্রাজিল)
অধিনায়ক : থিয়াগো সিলভা (সম্ভাব্য)
ফিফা র্যাংকিং : ২
বিশ্বকাপে মোট মোট অংশগ্রহণ : ২০
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সাফল্য : চ্যাম্পিয়ন
একটা সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা যাক। বলুন দেখি, বিশ্বকাপের সবগুলো আসরে কমন একটি বিষয় কী? প্রশ্ন শেষের আগেই উত্তর দেয়া যায়! ‘ব্রাজিল’। একেবারেই সঠিক। ১৯৩০ থেকে ২০১৪, উত্থান পতনের কত অধ্যায় রচিত হয়েছে। প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন দল উরুগুয়ে বিশ্বকাপেই নেই। দ্বিতীয় আসরের সেরা ইতালি দল পরের আসরে গ্রুপ পর্বেই হাওয়া। পূর্ব জার্মানির পর সোনার ট্রফি ঘরে তুলেছে অভিন্ন জার্মানি, টানা দুইবার ফাইনালে গিয়েও টোটাল ফুটবলের জনক হল্যান্ড ঘরে তুলতে পারেনি বিশ্বকাপ। অজস্র গল্প আছে প্রতিবারেই। নতুন দলের আগমন, কারো বিদায়। একমাত্র ব্রাজিল রয়ে গেছে। প্রত্যেকটি আসরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে হলুদ ঝান্ডা উড়িয়ে। ১৯৩০ এ যুগোস্লাভিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের ফার্নান্দো, প্রিগুইনহো, অস্কারিনো থেকে শুরু করে হল্যান্ডের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ম্যাচের গুস্তাভো, লুইজ, মার্সেলো; মাঝের দীর্ঘসময়ে পেলে, গারিঞ্চা, তোস্তাও, কার্লোস আলবার্তো, রোমারিও, রোনালদো, কাফু, রোনালদিনহো, কাকারা মিলে বিশ্বকাপ দাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন। সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা অন্তত আরো চার বছর নিজেদের একাধিপত্য ধরে রাখতে পারবে যদি না জার্মানি টানা দুটো শিরোপা বগলদাবা করে। বরঞ্চ একবিংশতম আসরে ব্রাজিলের সম্ভাবনা খুব জোরালো। কোচ তিতে একটু একটু করে কাঁদামাটি দিয়ে স্থাপত্য তৈরি করেছেন। তারুণ্য নির্ভর দলের অনেকের জন্য হতে পারে প্রথম বিশ্বকাপ তবে মোটেই বিচলিত নন তারা। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে চরম ভরাডুবির পর ঢেলে সাজানো হয়েছে দলকে। মাঝে কার্লোস দুঙ্গায় তাল কেটে গেলেও দক্ষ হাতে কক্ষপথে ফিরিয়েছেন তিতে। বাছাই পর্বে অপ্রতিরোধ্য এক ব্রাজিলকে দেখেছে সকলে, মূল পর্বে তার প্রতিফলনের অপেক্ষা। প্রাণভোমরা নেইমার আছেন ফর্মে, নাম্বার নাইন গ্যাব্রিয়েল হেসুসও ছন্দময়ী, মার্সেলো, অ্যালিসন, ক্যাসেমিরো, উইলিয়ানরা পরীক্ষিত। ১৮ই জুন বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে মিশন হেক্সা, ‘ই’ গ্রপে ব্রাজিলের বাকি দুই প্রতিপক্ষ কোস্টারিকা এবং সার্বিয়া। ‘৫৮, ‘৬২, ‘৭০, ‘৯৪, ‘০২ এর পর ২০১৮ কি হবে ব্রাজিলময়? যদি হয় তবে একবিংশ শতাব্দীতে একবিংশতম আসরে প্রথম দল হিসেবে দুইবার ট্রফি উঁচানোর সুযোগ হবে ক্যানারিনহোদের।
• আর্জেন্টিনা
ডাকনাম : লা আলবিসেলেস্তে
হেডকোচ : হোর্হো সাম্পাওলি (আর্জেন্টিনা)
অধিনায়ক : লিওনেল মেসি
ফিফা র্যাংকিং : ৫
বিশ্বকাপে মোট অংশগ্রহণ : ১৬
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সাফল্য : চ্যাম্পিয়ন
ভাবুন তো একবার, বিশ্বকাপে আপনার প্রিয় আকাশী নীল দল নেই এবার! এমনটি হওয়ার উপক্রমই হয়েছিল লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্ব জুড়ে। ইতালি হল্যান্ডের মত আর্জেন্টাইনদেরও দর্শক হয়ে থাকতে হয়নি, বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে রাশিয়ার টিকেট নিশ্চিত করে গত আসরের রানার্স আপ দলটি। তারকার অভাব নেই হোর্হে সাম্পাওলির দলে। হিগুয়াইন, আগুয়েরো, ডি মারিয়া, দিবালা সব ভারিক্কি নাম। তাদের নেতা হিসেবে আছেন লিওনেল মেসি। ২০১৪ বিশ্বকাপে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েও দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি। মেসির বয়স এখন ৩১। কাতার বিশ্বকাপে হয়ত খেলবেন কিন্তু কতটা বিধ্বংসী থাকবেন? আক্ষরিক অর্থে তাই রাশিয়ায়ই মেসির সামনে ফাইনাল অপরচুনিটি। ২০০৬, ‘১০ কিংবা ‘১৪। তিনবারই জার্মানির কাছে কাবু হয়ে শূন্য হাতে ফেরা। কথা দিয়ে কথা রাখা যায়নি, অধিনায়ক মেসি এবার সতর্ক। নিজেই বললেন, আমরা ফেভারিট নই! নির্ভার হয়ে খেলতে চাচ্ছেন। নির্ভার আর্জেন্টিনা আর তাদের জাদুকরী চতুষ্টয় কতখানি ভয়ংকর তার পরিণাম অনেকবার দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। দিন কয়েক আগে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে মেসির হ্যাটট্রিকে হাইতিকে উড়িয়ে দিয়েছে সাম্পাওলির শিষ্যরা। ডাগআউটে দাঁড়ানো টেকো এই আর্জেন্টাইন ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকা জিতিয়েছেন চিলিকে, আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই। এবার মাতৃভূমির ঋণ চুকানোর পালা। ম্যারাডোনা বলেছেন, কিচ্ছু হবে না বর্তমান দলকে দিয়ে। মেসি বললেন ফেভারিট না হবার কথা। যত যাই বলুন, একুশতম বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় তারকা মেসিকে ঘিরে আরো একবার স্বপ্নজাল বুনছে ভক্তকূল, যে জালে আটকা না পড়তে তৈরি ‘ডি’ গ্রুপের অন্য তিন দল। নবাগত আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া এবং সুপার ঈগল নাইজেরিয়া।