বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পাসওয়ার্ড একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন সাইটে আমরা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকি। আর এই পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা প্রায়ই কিছু ভুল করি। ভার্জিনিয়া টেক অ্যান্ড ড্যাশলেন এর দেয়া নতুন গবেষণার তথ্যানুসারে দেখা গেছে নেটওয়ার্কিং এর ক্ষেত্রে বেশীরভাগ মানুষ পাসওয়ার্ড হিসেবে প্রিয় ব্র্যান্ড বা পছন্দের দলের নাম ব্যবহার করে থাকে। অথবা একই পাসওয়ার্ড বারবার ব্যবহার করে। এটা করে থাকে কারণ এসব ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু এরকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা মোটেও নিরাপদ না। কারণ হ্যাকাররা সহজেই আমাদের পাসওয়ার্ড অনুধাবন করে ফেলতে পারে।
গবেষণায় প্রায় ৬০ লাখ বেনামি পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করেন ভার্জিনিয়া কম্পিউটার সায়েন্স গবেষক গ্যাং ওয়াং। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বিশাল সংখ্যায় তথ্য ফাঁসের ফলে এই পাসওয়ার্ডগুলো ফাঁস হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায় নিম্নোক্ত ভুলগুলো ব্যবহারকারীরা করে থাকে পাসওয়ার্ড দেয়ার ক্ষেত্রে।
একই পাসওয়ার্ডে সামান্য পরিবর্তন করে বারবার ব্যবহার করা
ওয়াং এর গবেষণায় দেখা গেছে, অর্ধেকের বেশি মানুষ একই পাসওয়ার্ড একটু পরিবর্তন করে বিভিন্ন সাইটে ব্যবহার করে। ওয়াং এর মতে, ‘একজন গড়পরতা মানুষের পক্ষে সম্ভব না ১৫০টা সাইটের জন্যে আলাদা পাসওয়ার্ড মনে রাখা। তাই সবাই একই পাসওয়ার্ড বারবার ব্যবহার করে অথবা হালকা পরিবর্তন এনে পাসওয়ার্ড দেয়। এটা খুবই বাজে অভ্যাস। বর্তমানে তথ্য ফাঁস হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ব্যবহারের অভ্যাস। এর ফলে হ্যাকারদের জন্যে পাসওয়ার্ড অনুধাবন করা সহজ হয়ে যায়”।
পাসওয়ার্ড ওয়াকিং
পাসওয়ার্ড ওয়াকিং প্রত্যয়টা দিয়ে বোঝানো হয় পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সংখ্যা বা বর্ণের এমন একটা কম্বিনেশন ব্যবহার করা যেখানে সংখ্যা এবং বর্ণগুলো একটা আরেকটার সাথে সম্পর্কিত বা পাশাপাশি অবস্থান করে। উদাহরণস্বরূপ ড্যাশলেনের গবেষণায় পাওয়া নমুনা দেখানো হল-
1q2w3e4r
1qaz2wsx
1qazxsw2
zaq12wsx
!qaz2wsx
1qaz@wsx
আপনি কোয়ের্টি কিবোর্ডের সাথে পরিচিত থাকলে সহজেই বুঝতে পারবেন আমরা কোথায় ভুল করে থাকি।
পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে ভালোবাসা বা ক্ষোভ প্রকাশ
পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরেকটা বহুল ব্যবহৃত বদভ্যাস হচ্ছে মনের আবেগকে পাসওয়ার্ডে পরিণত করা। ভালোবাসা বা ক্ষোভের অনুভূতি থেকে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা মানুষের মধ্যে খুব বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে এই গবেষণায়। ড্যাশলেনের গবেষণায় পাওয়া এমন কিছু নমুনা হচ্ছে-
iloveyou
f*ckyou
a**hole
f*ckoff
iloveme
trustno1
beautiful
ihateyou
bulls*it
lovelove
পাসওয়ার্ড যেহেতু আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপের একটা অংশ তাই তথ্য ফাঁস রোধে আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ। সুতরাং প্রিয় খেলোয়াড়, পছন্দের ব্র্যান্ড বা দলের নামে পাসওয়ার্ড রাখবেন না। আর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ী কোন দলের নাম তো মোটেও নয়।